২০১৬-এর সেপ্টেম্বরে ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ এবং ভারতের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী মনোহর পারিকর যখন রাফালে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তাতে সায় ছিল না কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের। চুক্তির স্থিরিকৃত দাম নিয়ে বাকিদের সঙ্গে সহমত ছিলেন না ওই আধিকারিক।
রাফালে চুক্তি মন্ত্রীসভায় পাশ করার , প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন কন্ট্রাক্ট নেগোসিয়েশন কমিটির সদস্য ওই আধিকারিক। চুক্তির সময়ে তিনি ছিলেন অর্থ মন্ত্রকের অ্যাকুইজিশন ম্যানেজার এবং যুগ্ম সচিব। সূত্রের খবর অনুযায়ী, একমাত্র ওই আধিকারিকের রাফালে চুক্তিতে সম্মতি না থাকায় ক্যাবিনেটে রাফালে চুক্তির প্রস্তাব পাশ হতে দেরি হয়। শেষমেশ ওই আধিকারিকের আপত্তিকে নাকচ করে দেন অন্য আরেক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক।
আরও পড়ুন, রাফালে ডিলে ভারতীয় পার্টনার ফরাসি সরকার বাছে নি: ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ
ফ্রান্স থেকে কেনা যুদ্ধ বিমান নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে ওঠায় আপাতত চুক্তির যাবতীয় কাগজ খতিয়ে দেখছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটার জেনারেল (ক্যাগ) বিভাগ। খুব সম্ভবত সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হলেই ক্যাগ এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করবে। ভারতীয় বায়ু সেনার উপ প্রধান ছিলেন কন্ট্রাক্ট নেগোসিয়েশন কমিটির দায়িত্বে। যুদ্ধ বিমানের দাম নিয়ে বেশ কয়েক দফা বোঝাপড়া চলার পর চূড়ান্ত দাম নির্ধারিত হয়।
অর্থ মন্ত্রকের অ্যাকুইজিশন ম্যানেজার এবং যুগ্ম সচিব পদাধিকারীর অসম্মতির মূল কারণ ছিল রাফালে জেট প্লেনের স্থিরিকৃত দাম প্রস্তাবিত ১২৬ রাফালের চেয়ে বেশি রাখা হয়েছিল।
ফ্রান্স এবং ভারতের মধ্যে রাফালে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০০৭ এর 'মিডিয়াম মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট (এমএমআরসিএ)' টেন্ডারের আওতায়। চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে ৬টি সংস্থার সঙ্গে আলচনায় বসে কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রক। ওই আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন জার্মানির ইউরোফাইটার সংস্থা ডাসল্টের চেয়েও ২০ শতাংশ বেশি ছাড় দিতে চেয়েছিল ভারতকে।
আধিকারিক জানিয়েছেন, হ্যালের তৈরি রাশিয়ান সুখোই-৩০ বিমান কিনলে আরও বেশি সংখ্যক যুদ্ধ বিমান কিনতে পারত ভারতীয় বায়ু সেনা। তবে ওই আধিকারিকের আপত্তিকে নাকচ করে দেন অ্যাকুইজিশন বিভাগের ডিজি। তিনি সুখোই-৩০ বিমানের পরিবর্তে রাফালে বিমান কেনার পক্ষে ছিলেন।
অবশেষে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সময়ে অ্যাকুইজিশন ম্যানেজার এবং যুগ্ম সচিব পদে অন্য এক আধিকারিককে এনে তবেই ক্যাবিনেটে প্রস্তাব পাশ হয় সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে। দিন কয়েকের মধ্যেই দু'দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চুক্তিবদ্ধ হন, ২০১৬-এর ২৩ সেপ্টেম্বর।