'গণতন্ত্রে বিজেপির সঙ্গে না পেরে দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। ভাবছেন এসব করে বিজেপিকে থামানো যাবে। কিন্তু দেওয়াল লিখন স্পষ্ট। পড়ে ফেলুন।' বিহার জয়ের উদযাপনী মঞ্চ থেকে বিরোধী শিবিরকে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজনীতির কারবারীদের মতে নাম না করলেও আদতে মোদী নিশানা করেছেন বাংলার মমতা সরকারকে। গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ ২১শে বাংলা জয়। লক্ষ্যপূরণে দল ও প্রধানমন্ত্রী কতটা মরিয়া এ দিন তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমেই তা স্পষ্ট করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
গত লোকসভায় এ রাজ্যে বড় নির্বাচনী সাফল্য পেয়েছে পদ্ম বাহনী। তারপর থেকেই বিজেপির নেতা, কর্মী, সমর্থক হত্যার দাবি, পাল্টা দাবিতে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত। বাংলায় ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক হত্যার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিতেও সরব হয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব।
এ প্রসঙ্গে ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। তিনি বলেছেন, 'সংবিধানের মধ্যেই থেকেই রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়ে থাকে। তবে, পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের মত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি রয়েছে।' হিংসার রাজনীতি প্রেক্ষিতে মমতা সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেছেন, 'বাংলার আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।'
আরও পড়ুন- উন্নয়নই জয়ের চাবিকাঠি…গণতন্ত্রে হত্যার রাজনীতির জায়গা নেই: মোদী
বিহারে গেরুয়া শিবিরের জয়ে প্রতিবেশী বাংলায় আগামী ৬ মাস পরের ভোটে কী প্রভাব পড়বে? আপাতত তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। নাম না করলেও এর মাঝেই রাজনৈতিক হিংসার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিশানায় তৃণমূল সরকার। যা বাংলা জয়ের লক্ষ্যে মমতা প্রশাসন ও সরকারের উপর বিজেপির চাপ বৃদ্ধির কৌশল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আনলক পর্বে রাজ্যে বিজেপির নেতা,কর্মীদের দেহ উদ্ধারের ঘটনা যেন বেড়ে উঠেছে। হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক থেকে গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় উদ্ধার হচ্ছে গেরুয়া কর্মীদের মৃতদেহ। বুধবারও একই ঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। কাঁথির ভগবানপুর বিধানসভার ইটাবেড়িয়া অঞ্চলের বিজেপির সক্রিয় কর্মী গোকুল জানাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুজোর আগে টিটিগড়ের যুব মোর্চার নেতা মণীশ শুক্লাকে ভরসন্ধ্যা গুলি করে হত্যা করা হয়। এক্ষেত্রেও পদ্ম বাহিনীর নিশানায় জোড়া-ফুল। এ পর্যন্ত রাজ্যে শতাধিক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি বিজেপির। কয়েক সপ্তাহ আগে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে অমিত শাহের সহ্গে দেখা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সূত্রের খবর, বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য-রিপোর্ট সেই বৈঠকে পেশ করেছেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে দিল্লিতে দলের সদর দফতরে দাঁড়িয়ে মোদীর বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন