শিবসেনা, নবনির্মাণসেনা, রণবীরসেনা, এমনকি কারণিসেনার নাম শুনেছেন। কিন্তু, মতুয়া সেনা? হ্যাঁ, চুপি সাড়ে এই বাংলায় জন্ম নিয়েছে মতুয়া সেনা।
উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগরে মঙ্গলবার মোদীর সভা পরিচালনা করার মাধ্যমে বাংলায় যাত্রা শুরু করল মতুয়া সেনা। ইতিমধ্যে এই সেনার সদস্য সংখ্যা ৫হাজার ছাড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন সংগঠনের সভাপতি বিপুল দাস। সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করাই এখন একমাত্র লক্ষ্য মতুয়া সেনার।
আরও পড়ুন- তৃণমূল এখন ট্রিপল টি-তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স: মোদী
শনিবার প্রধাানমন্ত্রীর সভায় ওয়াকিটকি হাতে ঘুরতে দেখা যায় একাধিক যুবককে। পুলিশি নিরাপত্তা ছাড়াও এখন আয়োজক রাজনৈতিক বা ধর্মীয় সংগঠন নিজেরাই স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে। যেহেতু ছোট-বড় যে কোনও নেতৃত্বকেই তাঁরা চেনেন, সেক্ষেত্রে সভা সামলানোও সহজ হয়। তাছাড়া, সভাগুলিতে নির্দিষ্ট সংখ্যার পুলিশ থাকে। ফলে, এমন স্বেচ্ছাসেবরা উপস্থিত থাকলে, সুবিধাই হয়। ভিড় সামলানোর জন্য সংগঠনের ওই স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে থাকে ওয়াকিটকি। কিন্তু, মতুয়াদের সভায় কি নিছক স্বেচ্ছাসেবকরাই সামলাচ্ছিলেন সভা? না, তা মনে করার কোনও কারণ নেই। এঁরাই মতুয়া সেনা। এটা তাঁদের প্রথম 'অফিসিয়াল অ্যাসাইনমেন্ট'।
শনিবার সাতসকালে কামনাসাগরের মাঠে ওয়াকিটকি হাতে ঘুরতে দেখা গেল বিপুল বিশ্বাসকে। বিপুলবাবই মতুয়া সেনার সভাপতি। তিনি জানালেন, "প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমরা ৩ হাজার মতুয়া সেনা রয়েছি। এর মধ্যে ১০০ জনের হাতে রয়েছে ওয়াকিটকি। নানা বিভাগে ভাগ করে আমরা কাজ করছি। আমি নিজেও দায়িত্ব সামলাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমাদের সদস্য ৫ হাজার ছুঁয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সভার মাধ্যমে আমরা কার্যক্রম শুরু করলাম।"
আরও পড়ুন- সামিয়ানা ভাঙার স্মৃতি উসকে ঠাকুরনগরে মোদীর সভায় চরম বিশৃঙ্খলা
কোনও প্রশিক্ষণ শিবির করেছেন?
বিপুলবাবুর কথায়, "আমরা এরই মধ্য তিনটে শিবির করেছি। ২২, ২৭ ও ৩১ জানুয়ারি এই ট্রেনিং হয়েছে। শৃঙ্খলা পরায়ণ বৃহত্তর শক্তি হতে চাই আমরা। আমাদের উদ্দেশ্য, মতুয়া ধর্ম ও দর্শন ছড়িয়ে দেওয়া। এছাড়া দুর্যোগ বা বিপদে-আপদে মানুষের পাশে থাকা।"
সংগঠনের নামে 'সেনা' শব্দের উপস্থিতি মানেই তো একটা অন্য রকম সংঘর্ষের ইঙ্গিত, না কি?
বিপুল বিশ্বাসের দাবি, "অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা করছে মতুয়া সেনা বিষয়টিকে"।
আরও পড়ুন- “বারাণসীতে মোদী জিতবেন তো?”
এদিকে, সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসংঘের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিতে শুরু করেছে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ি এখন মোদী এবং দিদিতে বিভক্ত। এ কথা মেনে নিচ্ছেন ঠাকুরনগরের অধিকাংশ মানুষই। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পর স্বল্প পরিচিত শান্তনু ঠাকুর এবার মতুয়া সমাজে অনেকটাই স্বীকৃতি পেলেন বলেও মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এখানেই তাঁরা ক্ষান্ত নন। এবার মতুয়া সেনার মাধ্যমে আরও 'শক্তিধর' হতে চাইছেন তাঁরা।
শুধু বনগাঁ লোকসভাতেই মতুয়া ভোট রয়েছে প্রায় ৬৫ শাতংশের বেশি। এছাড়া রাজ্যের প্রায় ১৪টি লোকসভা আসনে ব্যালান্স ফ্যাক্টরও মতুয়াদের ভোট। এরই মধ্যে নিজেদের শক্তি বিস্তার করতে উদ্যোগ নিচ্ছে মতুয়া সেনা। নিজেদের 'সমাজ সেবা'য় নিয়োজিত করতে চায় এই সেনা।