দেউচা-পাঁচমি কয়লা খনি উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতে নিষেধ করে চিঠি লিখলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রকল্পটি পরিবেশজনিত ছাড়পত্র পায় ও ওই এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন সমস্যা দূর হয়, ততক্ষণ রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়া উচিত হবে না বলে মনে করেন গেরুয়া শিবিরের রাজ্যসভার এই সাংসদ।
স্বপন দাশগুপ্ত প্রধানমন্ত্রীকে চিটিতে লেখেন, 'প্রকল্পটি এখনও পরিবেশ ছাড়পত্র পায়নি। এছাড়া ওই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। ওখানে কয়লাখনি হলে, স্থানীয়দের কী কী অসুবিধা হবে তা একাধিকবার জানিয়েছেন তারা। রাজ্য সরকারের তরফে আদিবাসীদের পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও, এখনও সেই কাজ শুরু হয়নি। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বীরভূমে রাজনৈতিক হিংসা বেড়েছে। হিংসার পিছনে রয়েছে জমি মাফিয়াদের হাত।'
আরও পড়ুন: দেশীয় সংস্থাগুলোর জন্য কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
বিজেপি সাংসদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর এমন অনুষ্ঠানে যাওয়া উচিত নয়, যেখানে গেলে বিতর্কে পড়তে হতে পারে। কয়লা উত্তোলন সংক্রান্ত যাবতীয় ছাড়পত্র দেউচা পাঁচামি খনি পাচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখেই মমতা সরকারের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাওয়া উচিত। না হলে ভুল বার্তা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করার অর্থ সব প্রক্রিয়া মেনে প্রকল্পের কাজ সবদিক থেকে সম্পূর্ণ হয়েছে, এমনটাই বোঝাবে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সঙ্গে কয়লাখনির পরিবেশ ছাড়পত্র পাওয়া ও আদিবাসীদের পুনর্বাসনের বিষয়টি লঘু হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে বাবুলকে ‘চরম হেনস্থা’, শাহকে চিঠি দিলীপের
দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ ‘ভাল’ হয়েছে বলে গত বুধবার জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠক এতটাই ‘ভাল’ হয়েছে যে মোদীকে পুজোর পর বাংলায় আসার আমন্ত্রণও জানিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা ব্লক পেয়েছে। বীরভূমে দেউচা-পাচামি কয়লা ব্লক অনুমোদন পেয়েছে। আমি বলেছি, পুজো মিটলে আপনি আসুন, ভাল করে উদ্বোধন করা হবে’’।
মোদী-মমতা এই বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নানা চর্চা। বিজেপি সাংসদের বক্তব্যে সেই চর্চায় নতুন ইন্ধন দিল। দেউচা পাচামি খনির ছাড়পত্র সহ নানা ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরোধিতায় সরব তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর লঘু সুরে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। মমতা সরকারের এই আমন্ত্রণেও নিহিত রয়েছে রাজনৈতির ফায়দার বিষয়। যা কার্যত মোদীকে মনে করিয়ে দিয়ে সাবধানী করতে চাইলেন সাংবাদিক ও সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতির বিশ্লেষকদের একাংশ।
Read the full story in English