তৃণমূল কংগ্রেসের ৪০ জন বিধায়ককে দলে টানার ইঙ্গিতপূর্ণ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এছাড়া দফায় দফায় তৃণমূল ভাঙানোর কথা বলেই চলেছেন মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষরা।এবার সেই হুঁশিয়ারিই বাস্তবে করে দেখানোর পথে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপির ‘বড় উত্থানের’ পরই তৃণমূলকে ‘তছনছ’ করতে নয়া উদ্যোগে ময়দানে নেমেছেন মমতার একদা প্রধান সেনাপতি মুকুল রায়। তৃণমূল ভেঙে বিজেপির কলেবর বাড়াতে মঙ্গলবার বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে গেরুয়া শিবির। এদিন বিকেলেই একাধিক তৃণমূল কাউন্সলির ও বিধায়কের হাতে উঠতে চলেছে পদ্মপতাকা। পরিকল্পনা মাফিক কাজ হলে রাজ্যের তিনটি পুরসভা রাতারাতি তৃণমূলের হাতছাড়া হবে।
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতরে পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নেবেন মুকুল-পুত্র তথা বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। বেশ কয়েকদিন ধরে শুভ্রাংশুর বিজেপিতে যোগদানের খবর নিয়ে চর্চা চলছিল। গত শুক্রবার তৃণমূল শুভ্রাংশুকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার পরই এ জল্পনা তুঙ্গে ওঠে।
তবে শুভ্রাংশুর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনার থেকেও এদিন অধিকতর তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে পুর কাউন্সিলরদের যোগদান। এই যোগদান পর্ব বাস্তবায়িত হলে এক লহমায় হালিশহর, কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি পুরসভার রাশ যাবে গেরুয়া শিবিরের হাতে। জানা যাচ্ছে, উত্তর চব্বিশ পরগনার একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর এদিন দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন। উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলেই পুত্র শুভ্রাংশু এবং বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলরকে নিয়ে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন মুকুল। আজ বিকলেই শুভ্রাংশুর পাশাপাশি ওই কাউন্সিলররাও বিজেপিতে নাম লেখাতে পারেন। জানা যাচ্ছে, হালিশহরের ১৮ জন, নৈহাটির ১৭ এবং কাঁচরাপাড়ার ১৪ জন কাউন্সিলর এদিন মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। সূত্রের আরও দাবি, দলবদলের এই তালিকায় রয়েছেন কয়েকজন তৃণমূল বিধায়কও। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই জল্পনা যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে ভোটের পর মঙ্গলবারই সব থেকে বড় ধাক্কাটি খেতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
আরও পড়ুন: আজ বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাংলোয় সাজ সাজ রব। ফুল দিয়ে যেমন সাজানো হয়েছে বাংলো চত্বর, তেমনই দেখা গিয়েছে বিভিন্ন তৃণমূল কাউন্সিলরদের। দুপুরে সকলের জন্য মধ্যাহ্নভোজেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে দলবদলের আগে কার্যত উৎসবের মেজাজে দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাসভবন। এক দিকে যখন এই ছবি তখন উত্তর চব্বিশ পরগনায় নিজের গড় রক্ষার কৌশল রচনায় বৈঠকে বসতে চলেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা ওই জেলার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।