"বিজেপিতেই থাকছেন শোভন-বৈশাখী," জানিয়ে দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সোমবার দিল্লিতে মুকুলের বাড়িতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা 'আড্ডা' দেন শোভন-বৈশাখী। এরপরই মুকুল রায় জানিয়ে দেন, বঙ্গ রাজনীতির এই মুহুর্তে দুই বহুলচর্চিত মুখ বিজেপি ছাড়ছেন না। তবে সেইসঙ্গে চাণক্যের কৌশলী মন্তব্য, "আগামী দিনে কী হবে তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।" মুকুলের সঙ্গে বৈঠকের পর শোভন-বৈশাখীর 'মানভঞ্জন' হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অর্থাৎ, আপাতত বিজেপি ছাড়ার মতো ‘চরম সিদ্ধান্ত’ থেকে সরে দাঁড়ালেন তাঁরা।
ঠিক কী বলেছেন মুকুল রায়?
এদিন বৈঠক শেষে মুকুল রায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, "কৈলাশজি (বিজয়বর্গীয়) বলেছিলেন, তুমি একবার পারলে শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে কথা বলো। তারপর দেখলাম ওরা এখানেই (দিল্লি) রয়েছে। তাই ডাকলাম ওদের। একসঙ্গে বসে অনেক গল্প হয়েছে। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে কথা হয়েছে। রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, অভিমান নিয়ে কথা বলেছি। ওরা বিজেপিতে ছিল, আছে। আগামী দিনে কী হবে ভবিষ্যৎ বলবে। এই মুহূর্তে ওরা বিজেপিতেই।"
আরও পড়ুন: মুকুলের খেলা? দেবশ্রীকে কে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি দফতরে, রহস্যভেদ করলেন বৈশাখী!
অন্যদিকে, মুকুলের সঙ্গে বৈঠকের পর বেশ হাল্কা মেজাজেই দেখা গেল শোভন-বৈশাখীকে। বৈঠক শেষে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গেল, "মুকুলদাকে ধন্যবাদ। দিল্লিতে এত ভাল বাঙালি খাবার খাওয়ানোর জন্য। মুকুলদার সঙ্গে দীর্ঘদিনের দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক।" বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "যখনই দিল্লিতে থাকি আমরা, মুকুলদার এখানে আড্ডা মারি। মুকুলদা ভাল ভাল খাবার খাওয়ান। চায়ে পে চর্চা হয়, আজও যেমন হল। যত ব্যথা, যন্ত্রণা ছিল, সব ওঁর কাছে ব্যক্ত করেছি। উনি আমার বড়দাদার মতো, সব জানিয়েছি।"
আরও পড়ুন: মমতা কখনও প্রকাশ্যে খারাপ কথা বলেননি, বৈশাখীর গলায় ‘বোধোদয়ের’ সুর
উল্লেখ্য, গত শনিবারই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে যোগ দেওয়ার মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান বৈশাখী। তাঁর এই সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করে শোভনবাবুও যে বিজেপি ছাড়তে চান, সেকথাও সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন বৈশাখী। সোমবারই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বৈশাখী বলেন, "দিলীপবাবু কোনও আলোচনার প্রস্তাব দেননি। তাই সমাধানসূত্র বেরনোর জায়গা নেই। কৈলাশজিকে স্পষ্ট করে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। বলেছি, বিজেপির লোকেরা আমাদের চায় না। অনাহুতের মতো কাজ করা সম্ভব নয়।"
পাশাপাশি শোভন-বান্ধবী এও বলেছিলেন যে, "বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তো রাজ্যে এসে দল চালাবেন না। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক না হলে, কাজ করা সম্ভব নয়।" শেষমেশ শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তার সেতুবন্ধনের কাজটা সামলালেন মুকুল, এবং 'চাণক্য' এই কাজে সফল হয়েছেন বলেই ব্যাখ্যা রাজনীতির কারবারিদের একাংশের।