তৃণমূল ত্যাগের পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বারবার গর্জে উঠেছেন একদা মমতারই 'প্রধান সেনাপতি' মুকুল রায়। ইদানীং প্রাক্তন দলনেত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে থাকেন বিজেপি নেতা মুকুল। লোকসভা ভোটের পর সম্প্রতি সেই আক্রমণের ঝাঁঝ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছেন মুকুল রায়। সেই ধারা অব্যাহত রেখে এবার তিনি মমতাকে ‘দেশদ্রোহী’ বললেন। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ বিতর্কে মমতার অবস্থানকে কড়া ভাষায় বিঁধে মুকুল বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন দেশদ্রোহী’’।
আরও পড়ুন: মুকুলকে ফের টেক্কা, বনগাঁ পুরসভাও ‘পুনরুদ্ধার’ করল মমতা বাহিনী
মুকুল রায় বলেছেন, ‘‘৩৭০ ধারা বিলোপের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভূমিকা নিয়েছেন, তাতে রাষ্ট্রদোহিতার কথা বলছেন। উনি বলছেন, পদ্ধতি ভুল হয়েছে। উনি কি সংবিধান বিশেষজ্ঞ? সারা ভারতবর্ষের সব রাজনৈতিক দল এক কথা বলছে, আর উনি অন্য কথা বলছেন। আমি বিজেপির পায়ে ধরব, কিন্তু লোকে জানবে না!’’ এ প্রসঙ্গে মুকুল পুলওয়ামা হামলার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রসঙ্গও তুলেছেন। একদা মমতা ঘনিষ্ঠ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলওয়ামা হামলার সময়ও সেনাবাহিনীর দিকে আঙুল তুলেছিলেন। উনি এখন দেশদ্রোহী’’।
আরও পড়ুন: বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের পরই মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন মুকুল রায়। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির উত্থানের নেপথ্যের অন্যতম কাণ্ডারী মুকুল, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। উনিশের নির্বাচনের পরই মমতার দুর্গে কার্যত ভাঙন ধরিয়ে একের পর এক তৃণমূল নেতাদের বিজেপিতে যোগদান করান মুকুল। শুধু কী তাই, হালিশহর, কাঁচরাপাড়ার মতো কয়েকটি পুরসভাও দখল নেয় বিজেপি। যদিও পরে মুকুলকে টেক্কা দিয়ে ওই পুরসভাগুলি ‘পুনরুদ্ধার’ করে মমতা বাহিনী। এই প্রেক্ষিতে মমতার বিরুদ্ধে মুকুলের এহেন আক্রমণ রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের একাংশের।
৩৭০ ধারা বাতিল প্রসঙ্গে কী বলেছিলেন মমতা?
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমরা এই বিলটি সমর্থন করি না। আমরা এই বিলের পক্ষে ভোট দেব না। কাশ্মীর ও সব জায়গার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। যদি আপনি একটা চিরস্থায়ী আলোচনায় আসতে চান, তাহলে সকলের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে’’। পুলওয়ামার ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, ‘‘পুলওয়ামায় কেন এমন ঘটনা ঘটল? কোথায় ছিলেন মোদীবাবু? আপনি তো জানতেন আগে, যে এমন ঘটনা ঘটবে। আপনার কাছে তো তথ্য ছিল। কেন এয়ারলিফট করালেন না? কেন নাকা তল্লাশি চালানো হল না? কেন মৃত্যুর মুখে ফেলে দিলেন জওয়ানদের? ভোটের রাজনীতি করবেন বলে? জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ভোটের রাজনীতি হয় না।”