কাটমানিকে হাতিয়ার করে যখন মমতাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি, ঠিক এই প্রেক্ষাপটে এবার কাটমানি আদায়ের কায়দায় মুকুল রায়ের নামে পোস্টার দেওয়া হল। তাও আবার অন্য কোথাও নয়, নিজের খাসতালুক কাঁচরাপাড়াতেই একদা মমতা ঘনিষ্ঠ তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নামে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। কোটি কোটি টাকার হিসেবে চেয়ে মুকুলের নামে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। মুকুলের পাশাপাশি সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের নামেও পোস্টার পড়েছে এলাকায়।
সেই পোস্টার। ছবি: এম আখতার।
আরও পড়ুন: ‘ব্যস্ত’ মুকুল-দিলীপ-বিজয়বর্গীয়, বঙ্গে পদ্ম ফোটানোর দায়িত্বে প্রশান্ত কিশোরের ‘বন্ধু’
কাঁচরাপাড়ার ঘটক রোড ও থানাপাড়া মোড়ে মুকুল-শুভ্রাংশুর নামে কয়েকটি পোস্টার লাগানো হয়েছে। পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘‘বাবা-ছেলে চিটিংবাজি করেছে কাঁচরাপাড়াজুড়ে। কাঁচরাপাড়ার জনগণের কোটি কোটি টাকার হিসেব দিতে হবে। মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায় প্রস্তুত হও’’। স্বভাবতই মুকুল রায়ের নামে এহেন পোস্টার ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। তবে এ ঘটনার পিছনে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেই মনে করছে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। প্রসঙ্গত, কাটমানি নিয়ে কার্যত আলোড়ন পড়ে গিয়েছে তৃণমূলে। মমতা বাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন মুকুল। পরবর্তী সময়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মমতার বিরুদ্ধে বারংবার আক্রমণ শানিয়ে আসছেন মুকুল। এমনকী, লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপির সাফল্যের অন্যতম কাণ্ডারী এই মুকুলই। উনিশের নির্বাচনের পর যে হারে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাতেও মুকুলের হাত রয়েছে। তাই মুকুলকে রুখতে তৃণমূল উঠেপড়ে লেগেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: শোভন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন, স্বীকার মুকুলের
অন্যদিকে, শুধু মুকুল-শুভ্রাংশুই নয়, বনগাঁ পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর দীপ্তি সরকারের নামেও পোস্টার দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘বনগাঁ পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর দীপ্তি সরকার তাঁর অসুস্থ স্বামী প্রদীপ সরকারের চিকিৎসার জন্য যে ২ লক্ষ টাকা নিয়েছেন, তা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে’’। উল্লখ্য, বনগাঁ পুরসভা দখল নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর যখন তুঙ্গে, সে সময় পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলরের নামে এহেন পোস্টার রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।