ঘাসফুল থেকে পদ্মফুল হয়ে ফের ঘাসফুল। বাংলার রাজনীতি দুনিয়ার সাম্প্রতিকতম ট্রেন্ড এটাই। হালিশহর, দক্ষিণ দিনাজপুরের পর এই রাজনৈতিক ধারায় যোগ হল কাঁচরাপাড়ার নামও। মুকুল-শুভ্রাংশু-অর্জুনদের হাত ধরে যেসব তৃণমূল কাউন্সিলররা দিন কয়েক আগেই পদ্ম পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন, এদিন তাঁরাই তৃণমূলের নিশান নিয়ে মিছিল করলেন 'কাঁচরাপাড়ার কাঁচা ছেলে'র খাস তালুকেই। কিছুদিন আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়ে যাঁরা পুরসভা পরিচালনা করছিলেন, সোমবার তাঁদেরই তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে মিছিল করতে দেখল কাঁচরাপাড়ার সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন- ‘মুকুল রায় তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন’
পুরসভা যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে তা জানান দিতেই এদিন কাঁচরাপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান সুদামা রায়, উপ-পুরপ্রধান মাখন সিন্হাসহ ২০ জন কাউন্সিলর এদিন মিছিল করলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের এদিনের মিছিল থানা মোড় থেকে শুরু হয়ে মিলননগরে শেষ হয়েছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস কাঁচরাপাড়া পুরসভা ফের দখল করলেও বিষয়টিকে পাত্তা দিতে নারাজ মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়। তিনি বলছেন, "৬ মাস পরেই তো নির্বাচন, তখন দেখা যাবে কী হয়"। উল্লেখ্য, দু'দিন আগেই বীজপুর থানার সামনে বিক্ষোভের সময় বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু বলেছিলেন, "খেলা অনেক বাকি রয়েছে"। এদিন তিনি বললেন, "বোর্ড থাকবে তো আর ৬ মাস"। প্রসঙ্গত, এবারের নির্বাচনে কাঁচরাপাড়া ও হালিশহর, এই দু'জায়গায়তেই তৃণমূল হেরে গিয়েছে। বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের দাবি, "পরের বার পুরনির্বাচনে মানুষ ওদের ভোট দেবে না"। তবে এদিন আর পুরসভায় অনাস্থা আনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
আরও পড়ুন- সব্যসাচী মামলায় পুর চেয়ারপার্সনকে যুক্ত করার নির্দেশ হাইকোর্টের
তবে এদিন তৃণমূলের পতাকা নিয়ে মিছিল করলেও কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান কয়েকদিন আগেও তাঁদের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসার কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। অথচ, এদিন মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন পুরপ্রধান সুদামা রায় এবং উপপুরপ্রধান মাখন সিন্হাই। সুদামা এদিন বলেন, "বোর্ড এখন তৃণমূল কংগ্রেসের। আমাদের সঙ্গে রয়েছে ২০ জন কাউন্সিলর"। কিন্তু, বিজেপি যোগ প্রসঙ্গে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে উপপুরপ্রধান মাখন দাস। কোনও রকমে ঢোক গিলে তিনি বলেছেন, ভুল বুঝে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে আশ্চর্যের বিষয়, এক ফুল থেকে অন্য ফুল হয়ে ফের পুরানো ফুলে ফিরে আসা কাউন্সিলরদের কারও গলাতেই আক্ষেপ নেই এতটুকু।