মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের প্রথম শুনানির পরই আদালতে যাওয়ার হুঙ্কার দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই গেরুয়া শিবির আইনি পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
ভোটের পরই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন মুকুল রায়। কিন্তু বিধায়ক পদ ছাড়েননি। বিধানসভায় খাতায়-কলমে কৃষ্ণগর উত্তরের বিধায়ক এখনও বিজেপিতেই। তারপরই দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য গত ১১ জুন বিধানসভার স্পিকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু আধিকারী। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই শুক্রবার ছিল প্রথম শুনানি। এদিন দুপুর ১.৫৫ মিনিটে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, কালনার বিধায়ক অম্বিকা রায়। শুনানি চলে সাড়ে তিন মিনিটের একটু বেশি সময়। তারপরই স্পিকারের ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বিজেপি বিধায়করা। জানা গিয়েছে, মুকুল রায়ের দলত্যাগ নিয়ে ৬৪ পাতার অভিযোগপত্র স্পিকারের কাছে জমা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবুও এদিনের শুনানিতে এ সংক্রান্ত আরও তথ্য জানতে চেয়েছেন স্পিকার। ৩০ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
আরও পড়ুন- দীনেশের ছেড়ে যাওয়া আসনে রাজ্যসভায় উপনির্বাচন ৯ অগাস্ট
পরে সাংবাদিকদের শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'ভারতের কোথাউ ভুয়ো ভ্যাকসিনের খবর মেলেনি, মানবাধিকার কমিশনও কোনও রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক, নেতাকে কুখ্যাত দুষ্কৃতি বলা হয়নি। কিন্তু, বাংলায় এসবের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তেমনই দেশের সর্বত্র দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু হলেও পশ্চিমবঙ্গে তা কার্যকর হয়নি। এর আগে বাঁকুড়ার বাম বিধায়ক দিপালী মিত্রের দলবদল ও বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে ২৩বার শুনানি হয়েছে। কিন্তু ফালাফল হয়নি। তাই পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমাদের এই প্রক্রিয়ায় আস্থা নেই। বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হবে।'
আরও পড়ুন- মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা খুনের তদন্তে CID
শুভেন্দু জানিয়েছেন, মূলত দু'টি দাবিকে সামনে রেখে আইনি পথে হাঁটবে বিজেপি। প্রথমত, বাংলায় দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা। দ্বিতীয়ত, দলত্যাগীদের বিধায়ক পদ খারিজের বিষয়টির নিষ্পত্তি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করার জন্য আদলতের নির্দেশিকা জারি করা। বিরোধী দলনেতার কথায়, 'রীতি ভেঙে ১৪ জন তৃণমূল বিধায়কের সমর্থনে মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যাান করা হল। মুকুল রায়ের দলবদলের প্রমাণ হিসাবে অডিও, ভিডিও, ভেরিফায়েড টুইটারের প্রমাণ জমা করা হয়েছে। এরপর সিদ্ধান্ত হতে বেশি সময় লাগা উচিত নয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলছে। তাই আদালতে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।'
সূত্রের খবর মুকুলের বিধায়কপদ খারিজ ইস্যুতে তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াতে তৎপর বিজেপি। বাংলায় দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার দাবিতে আগামী সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে পারে পদ্ম ব্রিগেড।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন