বেশিরভাগ শিবসেনা বিধায়ককে ইতিমধ্যেই নিজের শিবিরে এনে ফেলেছেন একনাথ শিণ্ডে। দুয়ারে সরকারের পতন। তার মধ্যেই আরও ধাক্কা শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সামনে। এবার কমপক্ষে ৪০০ প্রাক্তন কর্পোরেটর এবং কয়েকজন সেনা সাংসদের একটি তালিকা তৈরি করেছে শিণ্ডে গোষ্ঠী। নতুন সরকার গঠনের পর পরই এই করপোরেটর ও সাংসদদের সমর্থনমিলবে বলে আশা করছেন শিবসেনার 'বিদ্রোহী'রা। বর্ষা-পরবর্তী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে মহারাষ্ট্রে একাধিক স্থানীয় পুরনিগমের নির্বাচন। এই করপোরেট ও সাংসদদের সমর্থন মিললে শিণ্ডেরা বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারবেন বলে মনে করছেন।
একাধিক পুরনিগমের মেয়াদ চলতি বছর মার্চ মাসেই শেষ হয়েছিল। তবে শুরুতে করোনা, পরে উদ্ধব ঠাকরের অস্ত্রোপচার এবং তার বিলম্বিত পুনরুদ্ধারের কারণে নির্বাচন পিছিয়ে যায়।
আরও পড়ুন- ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে না ফিরলে…!’, বিদ্রোহী মন্ত্রী-বিধায়কদের চরম হুঁশিয়ারি সঞ্জয় রাউতের
এদিকে, শিণ্ডের ছেলে শ্রীকান্ত ছাড়াও, কল্যাণের সাংসদ ও বেশ কয়েকজন লোকসভা সাংসদওবিদ্রোহী শিবিরে যোগ দেবেন বলে খবর। তালিকায় রয়েছেন ওয়াশিমের সাংসদ ভাবনা গাওলি। ভাবনা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) জেরার সম্মুখীন হয়েছিলেন। যিনি আগেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের অবশ্যই বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধা প্রয়োজন।
সূত্রের খবর, একনাথ শিণ্ডে গোষ্ঠী মুম্বই মেট্রোপলিটন অঞ্চলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সাংসদকেও নিজেদের শিবিরে আনার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। দল সংকটে থাকলেও ওই সাংসদ বৃহস্পতিবার সকালে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে টলমল সরকার নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি।
আরও পড়ুন- ‘গণতন্ত্রকে বুলডোজ’, উদ্ধবের হয়ে জোর সওয়াল মমতার, নিশানায় বিজেপি
মহারাষ্ট্রের একজন বিজেপি নেতা বলেছেন, 'আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে যে ১৪ থেকে ১৫ জন সাংসদ শিণ্ডের দলে যোগ দিতে চলেছেন। তাদের বেশিরভাগই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশমার কারণে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন ভয় পাচ্ছেন, ভাবছেন যে পরেরবার আর জিততে হতে পারবেন না। তাই তাঁরা শিণ্ডে গোষ্ঠীতে চলে যাচ্ছেন।'
প্রথমে সাংসদরা, পরবর্তী পর্যায়ে কর্পোরেটরা শিণ্ডে শিবিরে যাবেন।
জানা গিয়েছে, আগেই সমস্ত ছক পদ্ম নেতারা করে রেখেছিলেন। কোন কোন শিবসেনা সাংসদদের ভাঙানো হবে তারও তালিকা তৈরি। সেই অনুযাই কাজ করছেন একনাথ শিণ্ডে।
আরও পড়ুন- বাংলাতেও ‘অপারেশন লোটাস’! ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি) বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শিণ্ডে থানে শহরের বাসিন্দা এবং থানে পুরসভারও একজন নেতা। নরেশ মাস্কে, যিনি বোর্ড ভেঙ্গে দেওয়া পর্যন্ত থানের মেয়র ছিলেন, বলেছিলেন যে, 'থানের বেশিরভাগ কর্পোরেটর শিণ্ডে সাহেবের সঙ্গে রয়েছেন। আমরা এখন থানে শহরে আছি এবং তাঁর সঙ্গেই যাব। আমরা উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে থাকতে চাই না। উলহাসনগর, কল্যাণ ডোম্বিভালি, ভিওয়ান্ডি নিজামপুর, নভি মুম্বাই, ভাসাই ভিরার, পানভেল এবং পুনে, পিম্পরি চিঞ্চওয়াড় এবং নাসিকের সহ অন্যান্য কর্পোরেশনের বেশিরভাগ কর্পোরেটর শিণ্ডেজির সঙ্গে রয়েছেন। পালঘর, ডাহানু, তালাসারি এবং থানে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা শিণ্ডে সাহেবের অনুগামী। বদল কয়েক দিনের ব্যাপার।'
শিবসেনার মুখপাত্র মনীষা কায়ান্দে পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন এবং সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত ফোন ধরেননি।
এছাড়াও, একনাথ শিন্ডে দলে যোগদানে আগ্রহী বিধায়কদের মধ্যে একজন হলেন বিধায়ক ইয়ামিনী যশবন্ত যাদব। তাঁর স্বামী এবং বিএমসি-র স্থায়ী কমিটির চেয়ারপার্সন যশবন্ত যাদবও শিণ্ডে শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। এঁরাও ইডির তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন।