Advertisment

রাজ্য কমিটি ঘোষণা হলেও তৃণমূলে তুঙ্গে ভাঙন আতঙ্ক, পথ প্রশস্ত তিপ্রা মথার!

রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার ত্রিপুরায় নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে।

author-image
Joyprakash Das
New Update
fear of disintegration in tripura tmc after announcement of the new state committee

চিন্তা বাড়ছে তৃণমূল নেতৃত্বের।

ত্রিপুরার রাজনীতিতে নয়া শক্তি হিসাবে উঠে এসেছে তিপ্রা মথা। মথার সভাপতি বিজয় রাংখাল বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে ত্রিপুরা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাঁরা তাঁদের দলে যোগ দিতে চাইছেন। ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের নয়া রাজ্য কমিটি ঘোষণা করার পর সেই সম্ভাবনা কী জোরালো হল? সেই প্রশ্নই এবার ঘুরপাক খাচ্ছে। কমিটিতে থাকলেও নেতৃত্ব নিয়ে দলের অভ্যন্তরে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। তৃণমূলের ওই অংশের দাবি, ত্রিপুরায় দলের মূল দায়িত্ব যাঁদের হাতে তাঁরা প্রাক্তন বিজেপি নেতৃত্বস্থানীয়। বিজেপির সঙ্গে লড়াইতে তিপ্রা মথাকে নিয়ে দলের একাংশ চিন্তা ভাবনা করছে বলে সূত্রের খরবর। রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার ত্রিপুরায় নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে।

Advertisment

তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি আশিসলাল সিং। আশিসলাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'কে বলেছে ত্রিপুরাতেই রাজনীতি করতে হবে। দেশের অন্যত্র রাজনীতি করা যেতে পারে। ছাত্র জীবনে বাংলায় রাজনীতি করেছি। উত্তরপ্রদেশেও দায়িত্ব সামলিয়েছি।' এদিকে আশিস দাস এদিন দলের নয়া কমিটি ঘোষণা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, 'এখন কিছু বলব না। সময় হলে বলব।' প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে সরাসরি ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন সোশাল মিডিয়ায়। তবে দুই আশিসবাবুই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন না। তাই নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

সূত্রের খবর, ত্রিপুরা তৃণমূলের একটা বড় অংশ তিপ্রা মথায় যোগাযোগ রেখে চলেছেন। আশিসলাল সিং তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করছেন, একথা বলেছেন খোদ তিপ্রা মথার সভাপতি বিজয় রাংখাল। যদিও এ ব্যাপারে এখনই খোলাখুলি কিছু বলতে চাননি আশিসবাবু। তবে তিপ্রা মথা যে ত্রিপুরায় এখন বড় রাজনৈতিক শক্তি সেকথা স্বীকার করেছেন আশিসবাবু। আদিবাসী সংগঠনের প্রতি তাঁর সমর্থন আছে বলেও তাঁর কথায় স্পষ্ট। ত্রিপুরায় উপজাতি মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য তিনি ২০১৪ থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগরতলার সমাবেশে বলেছিলেন, ভূমিপুত্রই ত্রিপুরার দায়িত্ব পাবে।

আরও পড়ুন- ত্রিপুরায় রাজ্য কমিটি ঘোষণা তৃণমূলের, সভাপতি সুবল ভৌমিক, দলে ঝড়ের ইঙ্গিত

আগামী ২০২৩-এ ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। সেই উপনির্বাচনের ফলাফলে অনেকটাই রাজনৈতিক শক্তি যাচাই হয়ে যাবে। কিন্তু ত্রিপুরা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা টানা ২৪ বছরের মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্রলাল সিংয়ের পুত্র আশিসলাল সিং তিপ্রা মথায় যোগ দিলে পরশি রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণের বদল ঘটতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একে ত্রিপুরা রাজপরিবারের উত্তরসুরী প্রদ্যুৎ কিশোর বর্মণ ও অন্যদিকে প্রভাবশালী মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র এক দলে থাকলে বেগ পেত হতে পারে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে। এমনই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। 

এরইমধ্যে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনে কোনও আসনে জয় পায়নি তৃণমূল। সেখানে দীর্ঘ দিন থেকে সংগঠনিক দায়িত্ব সামলেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বিধানসভা নির্বাচনের পর গোয়ায় সাংগঠনিক বিপর্যয় ঘটেছে ঘাসফুল শিবিরের। মেঘালয়ে ১২জন বিধায়ক কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিরোধী দল হয়েছে। অসমে প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ রিপুন বোরাকে দলে নিয়ে রাজ্য সভাপতি করেছে তৃণমূল। ছোট রাজ্য বিশেষ করে উত্তর পূর্বাঞ্চলে সংগঠন বিস্তারে নজর দিয়েছে বাংলার ক্ষমতাসীন দল। ত্রিপুরা, মেঘালয়ে তৃণমূল আদৌ কোনও রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে কীনা তা ২০২৩-এ স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।

tripura Tripura TMC
Advertisment