রাসসিনার লড়াইতে এবার এনডিএ-র প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। কিন্তু এই প্রথম নয়, রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে পাঁচ বছর আগেই নাম উঠেছিল ওড়িশার এই আদিবাসী নেত্রীর। তবে সেবার পদ্ম বাহিনীর নেতৃত্বে এনডিএ শিবির নয়, দ্রৌপদীর নাম বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূলের এক সাংসদ।
মঙ্গলবারই এনডিএর তরফে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা দ্রৌপদী মুর্মুর নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছেন। যা এককথায় মাস্টার স্ট্রোক বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির। এই ঘোষণার ২৪ ঘন্টা অতিক্রমের আগেই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন কুণাল ঘোষ। বিজেপির আদিবাসী প্রীতি কাড়তেই মরিয়া হয়ে অতীতকে স্মরণ করারনোর চেষ্টায় জোড়া-ফুলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০১৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূল বিরোধী জোটের প্রার্থী মীরা কুমারকে সমর্থন করেছিল। যদিও জয় পেয়েছিলেন এনডিএ প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দই। কুণাল ঘোষের দাবি, সর্বসম্মতিক্রমে প্রার্থী নির্বাচনের সময়ই তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দ্রৌপদী মুর্মুর নাম বিবেচনার জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই সময় তৃণমূলের প্রতীকে রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন কুণাল ঘোষ। এছাড়াও ওই তালিকায় নাম ছিল, নাজমা হেফতুল্লা ও দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়েরও। তবে, সেই প্রস্তাব গ্রাহ্য হয়নি।
আরও পড়ুন- শিক্ষিকা থেকে মন্ত্রী, এবার NDA-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী, আদিবাসীদের কাছে ‘মাটির মানুষ’ দ্রৌপদী মুর্মু
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পদপ্রার্থী হিসাবে তখ কোনও শিবির থেকেই কোনও নাম উঠে আসেনি। সাংসদ ও ভারতের একজন নাগরিক হিসাবে তখন আমি সর্বসম্মত প্রার্থী করার জন্য দ্রৌপদী মুর্মুর নাম প্রাস্তাব করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। এছাড়াও, নাজমা হেফতুল্লা ও প্রণববাবুর নামও বিবেচনার জন্য আবেদন করেছিলাম। দ্রৌপদী মুর্মু আধিবাসী হিসাবে ভালো কাজ করেছেন ও যোগ্য দেখেই ওই প্রস্তাব ছিল।'
এবার রাষ্ট্রপতি ভোটে এনডিএ-র প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। বিরোধী জোটের প্রার্থী যশবন্ত সিনহা। তাহলে এখন কুণাল ঘোষের অবস্থান কী? জবাবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে কুণাল ঘোষ বলেন, 'প্রত্যেকটা সময়ের একটা আলাদা প্রেক্ষিত থাকে। কিন্তু, গত তিন চার বছরের কেন্দ্রীয় সরকার যে দেশবিরোধী যে সিদ্ধান্ত, নীতি নিচ্ছে তাতে কে প্রার্থী সেটা বড় ব্যাপার নয়। কোন শিবিরের প্রার্থী সেটাই বড় কথা। যাঁরা দেশকে ধর্ম, জাতপাতের মাধ্যমে ভাগ করছেন, তাঁদের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। তাই সমর্থনের প্রশ্নই নেই। কেন তাহলে তখন অনগ্রসর শ্রেণির মীরা কুমারকে সমর্থন করল না ওরা। আসলে নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাপতে আদিবাসীদের প্রীতি দেখানো হচ্ছে।' এছাড়াও তাঁর দাবি, 'আমি ঠিক মানুষকে সঠিক কুর্শির জন্য খুঁজেছিলাম। আমিই স্পটার। এটা সকলকে মানতে হবে।'
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পাশা খেলায় হার ‘নিশ্চিত’, তবুও কেন প্রার্থী দিল তৃণমূল?
১৮টি বিরোধী দল ছাড়াও ট্আরওস ও আপ এবার যশূন্তকেই রাষ্ট্রপতি ভোটের লড়াইতে সমর্থন করবে। আগেই বিরোধী বৈঠক এড়িয়েছেন ওড়িশার শাসক দল বিজেডি। মঙ্গলবার এনডিএ-র পক্ষ থেকে ওড়িশার দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এরপর তাঁকেই সমর্থনের কথা আকারে-ইঙ্গিতে বলে দিয়েছে বিজু জনতা দল। মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক টুইটে নিজের খুশির কথাও ভাগ করে নিয়েছেন।
অঙ্কের হিসাবে দ্রৌপদী মুর্মুর রাষ্ট্রপতি হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এবারই প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসাবে রাইসিনায় যাবেন কোনও আদিবাসী।