বালাসাহেব ঠাকরে বেঁচে থাকাকালীনই তাঁর তথা শিবসেনার মনোভাব স্পষ্ট হত দলের মুখপত্র সামনায়। সেই ধারা বালাসাহেবের ছেলে উদ্ধব ঠাকরের জমানাতেও অব্যাহত রেখেছে শিবসেনা। মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বর্তমান চূড়ান্ত টালমাটালের মধ্যেও ছবিটা বিন্দুমাত্র বদলায়নি।
সামনাতেই বৃহস্পতিবারও মহারাষ্ট্রের রাজনীতির বর্তমান চালচিত্র ফুটিয়ে তুললেন সেনা নেতৃত্ব। দলের অভিযোগ, সরকারের স্থিতাবস্থা নষ্টের পিছনে সমস্ত কলকাঠি নেড়েছে বিজেপি। একইসঙ্গে সামনায় অভিযোগ করা হয়েছে, সেনা বিধায়কদের বিজেপি ফাঁদে ফেলেছে। সেনা কর্মীদের পরিশ্রম এবং অর্থে এই বিধায়করা জয়ী হয়েছেন। আর, তাঁদেরকেই কি না বিজেপি হোটেলবন্দি করেছে।
এই প্রসঙ্গে সামনায় লেখা হয়েছে, 'বিজেপি দাবি করছে, মহারাষ্ট্র সরকারের এই গন্ডগোলের পিছনে তাদের কোনও ভূমিকা নেই। অথচ, সেটা স্রেফ মজা করা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ, শিবসেনার বিধায়কদের কখনও রাখা হচ্ছে বিজেপিশাসিত গুজরাতের হোটেলে। কখনও আবার অসমের বিজেপি সরকারের এক মন্ত্রী তাঁদের আহ্বান জানাচ্ছেন। আর, দলবল নিয়ে অসমের হোটেলে চলে যাচ্ছেন শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়করা।'
স্বয়ং উদ্ধব ঠাকরেই বুধবার প্রশ্ন তুলেছিলেন, 'বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়লে আদৌ কি মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাবে শিবসেনা?' বৃহস্পতিবার উদ্ধবের সেই প্রশ্নকেই আরও জোরালো করে, সামনায় বলা হয়েছে, বিদ্রোহী বিধায়কদের সরকার গঠনের চেষ্টা মাঠে মারা যাবে। কারণ, সেই সরকারের লাভের গুড় বিজেপি খাবে। শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়কদের স্রেফ চেয়ে চেয়ে দেখতে হবে।
আরও পড়ুন- কিস্তিমাতের দাবি শিন্ডের, সঙ্গে ৪০ বিধায়ক, কে প্রকৃত শিবসেনা তাই নিয়ে টানাপোড়েন
এর মধ্যেই শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়করা অসমের যে হোটেলে আছে, তার বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের নেতাদের অভিযোগ, অসম বর্তমানে বন্যায় বিপর্যস্ত। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলের তলায়। অসংখ্য মানুষ জলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের কাছে ঠিকমতো ত্রাণও পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এখনও পর্যন্ত একফোঁটাও ত্রাণ দেয়নি। আর, হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিজেপি সরকার সেই ত্রাণ দেওয়ার বদলে শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়কদের রাজকীয় মর্যাদায় হোটেলে রেখেছে! যদিও বিক্ষোভ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
তার মধ্যেই বিভিন্ন মহলে খবর রটেছে, শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়কদের একাংশ এখনও উদ্ধব ঠাকরেকে সরাতে নারাজ। তাঁরা চান, উদ্ধব শুধু কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসুন। সেটাই যথেষ্ট। দলের কর্তৃত্ব থেকে উদ্ধবকে সরানোর কোনও প্রশ্নই নেই।
Read full story in English