New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2024/12/27/VF9NYKf39MAtL7T3Yk8s.jpg)
ঘরে-বাইরে প্রবল বিরোধীতা সত্ত্বেও ভারত-মার্কিন পারমাণবিক চুক্তিতে অনড় ছিলেন তিনি Photograph: (ফাইল চিত্র)
ঘরে-বাইরে প্রবল বিরোধীতা সত্ত্বেও ভারত-মার্কিন পারমাণবিক চুক্তিতে অনড় ছিলেন তিনি Photograph: (ফাইল চিত্র)
Manmohan Singh Death News: আমেরিকার সাথে পারমাণবিক চুক্তিতে অনড় ছিলেন মনমোহন! ওবামা তার প্রশংসা করে বলেছিলেন - 'যখন আপনি বলেন, বিশ্ব শোনে!'
প্রয়াত ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের 'স্থপতি' এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের 'কান্ডারি' প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে সাতদিনের রাষ্ট্রীয় শোক জারি করা হয়েছে এবং সকল কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এদিন সকালেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব।
মনমোহন সিং আমেরিকার সঙ্গে অসামরিক পারমাণবিক চুক্তির জন্য যতটা স্মরণীয় থাকবেন, ততটাই তিনি অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি হিসাবে দেশবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। রাজনৈতিক বিরোধিতা সত্ত্বেও মনমোহন সিং এই চুক্তিতে অনড় ছিলেন।
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বৃহস্পতিবার দিল্লি এইমস-এ রাত ৯টা ৫১ মিনিটে প্রয়াত হন। দেশের অর্থনৈতিক সংস্কারের কান্ডারি হিসাবে বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের। মনমোহন সিংয়ের প্রশংসা করে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা একবার বলেছিলেন, 'মনমোহন সিং যখন কথা বলেন, সারা বিশ্ব সেই কথা শোনে।' ওবামা তার বই 'এ প্রমিজড ল্যান্ড'-এ তাঁর ভূষসী প্রশংসা করেছেন। তিনি ডক্টর সিংকে ভারতের অর্থনীতির আধুনিকীকরণের কান্ডারি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
অর্থনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিরোধিতা সত্ত্বেও আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির ক্ষেত্রেও তার ভূমিকাকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। ১৮ জুলাই, ২০০৫-এ মনমোহন সিং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে চুক্তির রূপরেখা নিয়ে একটি যৌথ ঘোষণা করেন। কিন্তু এই চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয় ২০০৮ সালে। সেই সময়, মনমোহন সিং দেশের দায়িত্ব নেওয়ার ৩৯ মাস হয়ে গেছে। এই চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল শুধু বিরোধী দল নয়, কংগ্রেসের মধ্যেও শুরু হয় বিরোধিতা। সনিয়া গান্ধী নিজেই এর বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু অনড় ছিলেন মনমোহন সিং। প্রতিবাদে সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয় বামফ্রন্ট। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের মধ্যস্থতায় তিনি কয়েকটি দলকে রাজি করাতে সফল হন। সমাজবাদী পার্টি সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল।
সমস্ত বিরোধিতা সত্ত্বেও, মনমোহন সিং এই চুক্তির বিষয়ে অনড় ছিলেন এবং চুক্তিটি সম্পন্ন করেছিলেন। এই চুক্তির ফলে ভারত-আমেরিকা সম্পর্কও মজবুত হয়। এই চুক্তি ভারতকে 'নিউক্লিয়ার ক্লাবের' নয়া উচ্চতায় নিয়ে যেতে সাহায্য করে। চুক্তির প্রায় দু বছর পর কানাডার টরন্টোতে আয়োজিত হয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। তখন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মনমোহন সিংয়ের প্রশংসা করে বলেছিলেন, 'আমি বলতে পারি মনমোহন সিং যখন কথা বলেন, তখন গোটা বিশ্বের মানুষ শোনেন।'
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং ভারতের অর্থনীতি, অর্থনৈতিক সংস্কার এবং FDI এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিং ভারতের বিদেশ নীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর আমলে বার্ষিক জিডিপির গড় ছিল ৭.৭%।