গত পাঁচ বছরে তিনিই সামলেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি। সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে নঙ্গথোমবাম বীরেন সিং-ই ছিলেন দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। বিধানসভা নির্বাচনে গোয়া, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো মণিপুরেও ড্যাং ড্যাং করে জিতে গিয়েছে বিজেপি। ৬০ আসনের বিধানসভায় দলের আসনসংখ্যা ৩২। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পর বাকি ছিল শুধু শপথগ্রহণ। সোমবার ফের মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন ৬১ বছর বয়সি প্রবীণ রাজনীতিবিদ। রাজধানী ইম্ফলে তিনি শপথবাক্য পাঠ করেন।
রবিবারই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নির্মলা সীতারামন বীরেন সিং-কে মণিপুরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন। তার আগে নবনির্বাচিত দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্মলা। বৈঠক শেষে জানান, নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়করা সর্বসম্মতভাবে এন বীরেন সিং-কে তাদের দলনেতা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সোমবার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছুটে এসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগত্প্রকাশ নাড্ডা। স্বাগত জানাতে নিজেই হেলিপ্যাডে গিয়েছিলেন বীরেন সিং। সোমবার সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বীরেন সিং লেখেন, 'বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে ইম্ফলে স্বাগত। বিজেপির মণিপুর রাজ্য কমিটির তরফে নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় বীরেন সিংকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লিখেছেন, ' ফের মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ায় বীরেন সিংকে অভিনন্দন। আমি নিশ্চিত, গত পাঁচ বছরে তিনি যেভাবে মণিপুরের উন্নয়ন করেছেন, সেই ধারা আগামী দিনেও বজায় রাখবেন।' পালটা বীরেন সিং-ও তাঁর প্রতি আস্থা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। বীরেন সিংয়ের প্রতি বিজেপির আস্থা রাখার অবশ্য যথেষ্ট কারণ আছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম রাজ্য এবং একসময়ে অশান্তির শিখরে থাকা মণিপুরে তিনি শান্তি ফিরিয়েছেন। এখন আর মণিপুরে আগের মতো পার্বত্য অঞ্চল এবং উপত্যকার বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় গন্ডগোল চলে না।
আরও পড়ুন- ফিরছে তিন বিতর্কিত কৃষি আইন? জল্পনা বাড়াল সুপ্রিম কোর্টের প্যানেল
তবে, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগও নেহাত কম ওঠেনি। বিতর্কিত ইউএপিএ প্রয়োগ করে একের পর এক গ্রেফতারির অভিযোগ উঠেছে মণিপুরের এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে। এমন বিতর্কিত ব্যক্তির হাতেই ফের মণিপুরের ব্যাটন কেন তুলে দিল বিজেপি? রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
তবুও বীরেন সিং তো না-হয় নির্বাচনে জিতেছেন। উত্তরাখণ্ডে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তথা সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি হেরে গেছেন, সেখানেও মুখ বদল করতে ভয় পেয়েছে বিজেপি। উত্তরাখণ্ডের ছবি ধরা পড়েছে গোয়াতেও। সেখানেও সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী প্রমোদ সাওয়ান্ত ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী পদে মুখ খুঁজে পায়নি বিজেপি।
Read story in English