'শোনা বন্ধ করে দিয়েছেন নীতিশ কুমার। ২০১৫-এর নীতিশের সঙ্গে এখনকার নীতিশ বড়ই বেমানান।' বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এমনই মন্তব্য একদা তাঁরই ঘনিষ্ঠ ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের। মদ নিষিদ্ধ বিহারে বেআইনি মদের কারবার রুখতে পুরোপুরি ব্যর্থ নীতিশ, এমনই মনে করেন পিকে। তবে বিহার রাজনীতিতে এবার বড় চমক দিতে চান পিকে। তাঁর নতুন দলের কাজেই বিহার-জুড়ে প্রচারাভিযান সারছেন তিনি। তারই ফাঁকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মুখ খুললেন নানা বিষয় নিয়ে।
বিহারবাসী রাজনীতির ময়দানে এখন নতুন কাউকে চায় বলে মনে করেন পিকে। তাঁর কথায়, ''অধিকাংশ বিহারবাসীই বর্তমান শাসকদের মন থেকে মানতে পারছেন না। জেডি(ইউ) হোক বা আরজেডি সমর্থক, বা অন্যরা, প্রত্যেকেই নতুন কাউকে চাইছেন।'' নীতিশ কুমারের গ্রহণযোগ্যতা আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে বলেও মনে করেন পিকে।
তিনি বলেন, ''২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত নীতিশ কুমারকে নিয়ে কেউ বাজে কথা বলতেন না। তখন আমি তাঁর সঙ্গেই কাজ করতাম। ২০১৫ সালেও নীতিশকে কেউ গালিগালাজ করেননি। কিন্তু এখন লোকজন ওঁকে গালাগালি করছে। ২০১৫-এর ভোটের আগে তিনি বলতেন, সবচেয়ে খারাপ যা ঘটতে পারে তা হল তিনি হেরে যেতে পারেন। তিনি বলতেন, ‘হামনে ইজ্জত কামাই হ্যায়, লগ মুঝে গালি নেহি দেঙ্গে (আমি সম্মান অর্জন করেছি, মানুষ আমাকে গালি দেবে না)’। আমি মনে করি নীতিশ কুমারের জন্য সেই পর্ব ওখানেই শেষ। লোকে এখন বলবে লালু আর নীতিশ এক। এখনও বিহারে দুর্নীতি, অলসতা ও আমলাদের মধ্যে অদক্ষতা রয়েছে।''
আরও পড়ুন- সরব মোদী সরকার, ভারতে পাক সরকারের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল টুইটার
বিহারে মদ নিষিদ্ধ। তাও রাজ্যের নানা প্রান্তে রমরমিয়ে বেআইনি মদের কারবার চলে বলে অভিযোগ। মদ মাফিয়ারা একাংশের পুলিশের সহযোগিতায় দিনের পর দিন বিহারে অবৈধ এই কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। নীতিশ নেতৃত্বাধীন সরকার বেআইনি মদের কারবার রুখতে পুরোপুরি ব্যর্থ বলে মনে করেন পিকে। বিহারে মদের কারবার নিয়ে রাজ্যবাসীর ক্ষোভ চরমে উঠেছে বলে মনে করেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, ''একাংশের পুলিশ কর্তারা মদ আইনের ভয় দেখিয়ে টাকা কামায়। এই অবৈধ কারবারে যুক্ত হয়ে একাংশের যুবকও অপরাধী হয়ে উঠছে।''
তিনি আরও বলেন, ''কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি বিহারে এই মদ্যপান নিয়ে মহিলারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাঁদের স্বামী, ছেলে এবং ভাইদের মদ্যপানের জন্য জেলে পাঠানো হয়। মদ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। বেশিরভাগ পুলিশ আইন বাস্তবায়নে সরকারের কাছে তথ্য গোপন করছে। আমি কিছু আইপিএস অফিসারের সঙ্গে কথা বলার পরে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।''