এবার সভাপতি নির্বাচন নিয়েও কংগ্রেসে জলঘোলা। রাহুল গান্ধী রাজি না হওয়ায় পরবর্তী কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দৌড়ে বাকিদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা তাঁর নেই, বারবার একথা জানিয়েছেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। গেহলট অবস্থানে অনড় থাকায় এবার নাম না করে তাঁকে বার্তা রাহুলের। উদয়পুরে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরে 'এক ব্যক্তি-এক পদ' সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। রাহুল সেই বিষয়টির জিগির টেনে এদিন বলেন, ''আমি আশা করেছিলাম দলের প্রধান পদের ক্ষেত্রে উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে নেওয়া এক ব্যক্তি, এক পদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করা হবে''।
বৃহস্পতিবার কেরলে একটি সাংবাদিক সম্মলনে রাহুল গান্ধী বলেন, ''দলের সভাপতির পদটি সবের ঊর্ধ্বে উঠে একটি বিশ্বাস যা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে। কংগ্রেস সভাপতি শুধুই একটি সংগঠনের পদ নয়, এটি একটি আদর্শও বটে। যিনিই কংগ্রেস সভাপতি হবেন তাঁর মনে রাখা উচিত যে তিনি একটি ধারণা, একটি বিশ্বাস ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং ভারতের একটি দর্শনের প্রতিনিধিত্ব করছেন।''
বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুখর থাকলেও গত কয়েক বছরে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি বেশ দুর্বল হয়েছে। পরপর বেশ কয়েকটি নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে শতাব্দী প্রাচীন এই দলের। রাজ্যে-রাজ্যে তাবড় কংগ্রেস নেতারা দল ছেড়েছেন। দলের নীচুস্তরের কর্মীরাও নেতৃত্বের উপর আস্থা হারিয়েছেন অনেকটাই। এই পরস্থিতিতে দলকে চাঙ্গা করতে রাহুলের মস্তিষ্কপ্রসূত 'ভারত জোড়ো' যাত্রা। কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যে ছাপ ফেলেছে দলের এই কর্মসূচি।
আরও পড়ুন- ৫ রাজ্যের ভোটে রাশি-রাশি টাকা খরচ BJP-র, ব্যয়ের অঙ্ক জানলে চোখ কপালে উঠতে পারে!
বর্তমানে কংগ্রেসের এই কর্মসূচি কেরলে পালিত হচ্ছে। এদিন রাহুল গান্ধী দলের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, "আমরা এমন একটি যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছি যা এই দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে রুদ্ধ করে রেখেছে। এই শক্তির সীমাহীন টাকা আছে। লোকজনকে 'কিনে নেওয়া', নানাভাবে তাঁদের 'চাপ' দেওয়া এবং হুমকি দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই শক্তির। এর নিদর্শন গোয়ায় দেখা গিয়েছে।''
তিনি আরও বলেন, ''বর্তমানে যে ঘৃণা ও সহিংসতা দেখা যাচ্ছে তা দেশের জন্য ভালো নয়। এই যাত্রার উদ্দেশ্য ভারতের জনগণের কাছে এই বার্তাটি তুলে ধরা। নম্রতাই ভারতের বৈশিষ্ট্য এবং এই ভাবনাকেই বর্তমান সরকার বারবার আক্রমণ করছে। বিজেপি-আরএসএস-এর জোট ঘৃণা ছড়াচ্ছে। বাছাই করা কয়েকজন পুঁজিপতির সম্পত্তি বাড়ছে। বেকারত্বের হার এবং ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে একটি যোগসূত্র আছে। ভারতের মানুষ তা বুঝতে শুরু করেছেন।''