প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে 'ঘৃণার রাজনীতি' বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিলেন শতাধিক প্রাক্তন আমলা। যেখানেই বিজেপি ক্ষমতায়, সেখানেই 'ঘৃণার রাজনীতি'র অভিযোগ উঠছে। ইতিমধ্যেই বিজেপির অভ্যন্তরে নরেন্দ্র মোদী নিজেকে ইমেজকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, যেখানে আর কেউ নিয়ে যেতে পারেননি। শুধু তাই নয়, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীও। দলগতভাবে এবং রাষ্ট্রের চালিকাশক্তি হিসেবে তিনি এই 'ঘৃণার রাজনীতি' বন্ধ করতেই পারেন। সেই আইনগত থেকে যাবতীয় ক্ষমতা তাঁর আছে। সেকথা মাথায় রেখেই 'ঘৃণার রাজনীতি' বন্ধের জন্য স্বয়ং মোদীরই দ্বারস্থ হলেন প্রাক্তন আমলারা।
নিজেদের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁরা খোলা চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে লিখেছেন, 'আমরা দেশে ঘৃণাভরা ধ্বংসের উন্মত্ততা প্রত্যক্ষ করছি। যেখানে বলিদানের বেদিতে শুধু মুসলমান বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষই নন, সংবিধান নিজেও বলি হচ্ছে।' চিঠিতে যাঁদের সই আছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং, প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশংকর মেনন, প্রাক্তন বিদেশসচিব সুজাতা সিং, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব জিকে পিল্লাই, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রধান সচিব টিকেএ নাইয়ারের মতো দেশের সামনের সারির প্রাক্তন আমলারা। একসময় যাঁদের চোখ দিয়ে ভারত গোটা বিশ্বকে দেখেছে, যাঁরা দেশের মূল কান্ডারি হিসেবে গোটা প্রশাসনের খামতি ঢেকেছেন, তাঁদের এই চিঠিতে স্বভাবতই অস্বস্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনটাই মনে করছেন বিরোধী দল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন- মিলল না জামিন, অসম পুলিশের হেফাজতে আরও পাঁচ দিন জিগনেশ
কর্মজীবনে বারবার সরকারের খামতি ঢেকেছেন। সরকারের হয়েই সওয়াল করেছেন। অবসরের পর সেই সরকারেরই কেন বিরোধিতা করছেন? এই প্রশ্নের উত্তরও স্পষ্ট করেছেন চিঠিতে স্বাক্ষরকারী প্রাক্তন আমলারা। তাঁরা লিখেছেন, এবারও সরকারের কাছে এমন অভিযোগপত্র পাঠাতেন না। যদি না, যে সাংবিধানিক ভবনগুলো দেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে তিলে তিলে গড়ে তুলেছে, তা পোক্ত করেছে, সেই কাঠামোগুলো ধ্বংস হয়ে না-যেত। আর, সেই কারণেই তাঁরা বাধ্য হয়েছেন এই অভিযোগপত্র লিখতে। এটা কোনও এক বা দু'জনের বিষয় নয়। এটা গোটা দেশের বিষয়। তাই শতাধিক আমলা অনুরোধ বা অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলেও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন প্রাক্তন আমলারা।
Read story in English