বৃহস্পতিবার দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) তার নির্বাচনী আধিপত্য প্রদর্শন করেছে। জয় নিশ্চিত হলেও, মুর্মু বিরোধী শিবির থেকে একাধিক ভোট পেয়েছেন। যা বিজেপি-বিরোধী দলগুলোর মধ্যে বিভাজন এবং বিভ্রান্তির প্রমাণ বলে গেরুয়া শিবির মনে করছে। কিন্তু, ত্রিপুরায় আবার বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহা দুটি অতিরিক্ত ভোট পেয়েছেন। যা শাসক বিজেপি এবং ত্রিপুরা আদিবাসী ফ্রন্ট (আইপিএফটি)-র মধ্যে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করেছে।
যদিও বিজেপির দাবি, তারা ইতিমধ্যেই বিষয়টি দেখেছে। একইসঙ্গে দাবি করেছে যে তার বিধায়কদের কেউই দলের লাইনচ্যুত হননি। গেরুয়া শিবিরের ইঙ্গিত, জোট শরিক আইপিএফটির বিধায়করা যশবন্তকে সমর্থন করে থাকতে পারেন। কারণ, একবছরেরও বেশি সময় ধরে আইপিএফটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত। সেকারণেই তারা নিজেদের বিধায়কদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই বিজেপি নেতাদের ইঙ্গিত। আইপিএফটির দুই বিধায়ক গত বছর থেকেই নিজেদের দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। তার মধ্যে সিমনার বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মা এখন প্রতিদ্বন্দ্বী টিপরা মোথার সঙ্গে আছেন। আর, প্রাক্তন মন্ত্রী মেভার কুমার জামাতিয়া রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয়। তাঁরাই যশবন্ত সিনহাকে ভোট দিয়ে থাকতে পারেন বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যানারে, লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন না কেজরিওয়াল
সিনহার জন্য অতিরিক্ত ভোট আরও একটি কারণে আশ্চর্যের বিষয়। তা হল, ত্রিপুরার একটি উল্লেখযোগ্য উপজাতি জনসংখ্যা রয়েছে। পাশাপাশি, উপজাতি রাজাদের শাসনের দীর্ঘ ইতিহাসও আছে। এই উপজাতি রাজারাই ভারতের সঙ্গে ত্রিপুরা যুক্ত হওয়ার আগে ত্রিপুরা শাসন করতেন। আর, এবারই প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এক আদিবাসী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন। সেখানেই আবার ত্রিপুরার আদিবাসী বিধায়কদের বিরুদ্ধে ক্রস-ভোটিংয়ের অভিযোগ উঠল।
৬০-সদস্যের বিধানসভায় ৩৬ জন বিধায়ক নিয়ে ২০১৮ সালে বিজেপি প্রথমবারের মতো ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল। যদিও দুই বিধায়কের পদত্যাগ এবং তৃণমূল কংগ্রেসে এক বিধায়ক যোগ দেওয়ার পর বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা কমে গিয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে জয়ের পরে ফের ত্রিপুরায় বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা ৩৬-এ ফিরে এসেছে। পাশাপাশি, আইপিএফটি নির্বাচনে আটটি আসনে জিতেছে। কিন্তু, জামাতিয়া ও দেববর্মার জন্য এর বিধায়ক সংখ্যা ছয়ে নেমে এসেছে। সিপিএমের কাছে বর্তমানে ১৫ জন বিধায়ক রয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস একটিও আসন পায়নি। অবশ্য, এবারের নির্বাচনে তারা একটি আসনে জিতেছে।
Read full story in English