নকশালপন্থী নেতা চারু মজুমদারের একটি মূর্তির একাংশ ঢেকে দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল শিলিগুড়িতে। চারু মজুমদারের পরিবার এবং সিপিআইএমএল লিবারেশনের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের কর্মীরাই এই কাজ করেছেন। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন লিবারেশন নেতারা। সূত্রের খবর, ঘটনাটি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর এদিন দুপুরে ফের মূর্তিটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
বাংলা তথা ভারতে নকশালপন্থী রাজনীতির প্রতিষ্ঠাতা চারুবাবু শিলিগুড়িরই বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর পরিবার এখনও সেখানেই থাকেন। শহরের সুভাষপল্লী হাতিমোড়ের কাছে চারুবাবুর ওই আবক্ষ মূর্তিটি রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা দীনেশ ভট্টাচার্য বলেন, "মূর্তিটি প্রায় চার দশকের পুরনো। রবিবার দুপুর নাগাদ কয়েকজন এসে মূর্তিটি ঢেকে ফেলার কাজ শুরু করেন। চারুবাবুর মুখ না ঢাকা হলেও মূর্তিটির গায়ের ফলকে যে লেখাগুলি রয়েছে, সেগুলি ঢেকে দেওয়া হয়। কেন এমন করা হচ্ছে প্রশ্ন করলে উত্তর মেলে, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কর্মী। ভোটের নিয়ম মেনেই কাজ করছেন।"
আরও পড়ুন, General Election 2019: ভোটে কী করবে বাংলার নকশালরা?
চারু মজুমদারের ছেলে অভিজিতও শিলিগুড়ির বাসিন্দা। শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যাপক তথা সিপিআইএমএল লিবারেশনের নেতা অভিজিত এদিন বলেন, " নির্বাচন কমিশন এমন কাজ করতে পারে না। এটা তাঁদের এক্তিয়ারের বাইরে। এই মূর্তিটি আশির দশকে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তারপর এতগুলি নির্বাচন গিয়েছে, কেউ এমন করেনি। এবারের ভোটে দার্জিলিং কেন্দ্রে লিবারেশন বা অন্য কোনও নকশালপন্থী দল প্রার্থী দেয়নি। ফলে সিপিআইএমএলের নাম ঢাকার কোনও যুক্তি নেই।" তাঁর কথায়, "আমরা কমিশনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি কানিয়েছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়া হবে।"
সূত্রের খবর, লিবারেশনের চিঠি পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে কমিশন। কলকাতা থেকে নির্দেশ যায় মূর্তিটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার। তারপর এদিন দুপুরে কালো আচ্ছাদন সরিয়ে ফেলেন কমিশনের কর্মীরা।
১৯৮৪ সালে নকশালপন্থী নেতা মহাদেব মুখার্জির উদ্যোগে এই মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তারপর থেকে নকশালপন্থীদের বিভিন্ন গোষ্ঠী ও চারুবাবুর অনুগামীরা প্রতি বছর সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। প্রসঙ্গত, চারুবাবুর আমলে নকশালপন্থী ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল মূর্তি ভাঙার আন্দোলন। নির্বাচনের আগে সেই নেতার মূর্তিকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনা ছাড়াল শিলিগুড়িতে।