Advertisment

অনুব্রতর পর পার্থ, সিবিআই জুজু-তে তৃণমূলে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ

এক দিন আগেই দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য অনুব্রত মন্ডলকে নিয়ে 'খোঁচা' দিয়েছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এবার নিশানায় দলের মহাসচিব তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

author-image
Joyprakash Das
New Update
new political equation ain tmc after cbi summons anubrata mondal

অনুব্রত মণ্ডল, পার্থ চ্যাটার্জীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরির চেষ্টায় তৃণমূল?

একদিকে সিবিআই তদন্ত, অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি 'মনোভাব' 'কটাক্ষ' জবাব, নতুন রাজনৈতিক সীমকরণের অভিমুখ খুলে দিয়েছে। এক দিন আগেই দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য অনুব্রত মন্ডলকে নিয়ে 'খোঁচা' দিয়েছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এবার নিশানায় দলের মহাসচিব তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গ সেই সিবিআই। পর দুদিন দুই শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি দলের জবাব নিয়ে নতুন করে ভাবতে বসেছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisment

এর আগে চিটফান্ড কান্ডে মুকুল রায়, মদন মিত্র, সাংসদ কুণাল ঘোষস-সহ তাবড় তৃণমূল নেতৃত্বকে তলব করেছে সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি), এসএফআইও-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই সময় পথে নেমে তৃণমূল কংগ্রেস লাগাতার অন্দোলন করেছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্বও বজায় রেখেছিল। মুকুল রায়ের মতো দলের সেকেন্ড-ইন্ড-কমান্ডের কী হাল হয়েছিল তা রাজনৈতিক মহল প্রত্যক্ষ করেছে। এমনকী তিনি বিজেপিতে যোগও দিয়েছিলেন। যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের আর পরবর্তীতে সিজিও কমপ্লেক্সে দেখা যায়নি। যদিও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরও মুকুল রায়কে ডাকেনি কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে দলে সেই আগের পজিশনে এখনও আসতে পারেননি তিনি। তাঁর নানান আইনি দিকও রয়েছে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

মদন মিত্র সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছিলেন সিপিএমের মানস মুখোপাধ্যায়ের কাছে। তখন জল্পনা ছিল, দলের একাংশ এই পরাজয়ে 'খুশিই' হয়েছিলেন। নির্বাচনে ওই অংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। বিধায়ক হলেও মন্ত্রীত্ব থেকে দূরেই রয়েছেন মদন। শুধু তাই নয়, তাঁর ঘনিষ্ঠদের অনেকেই এবার পুরভোটে প্রার্থী হতে পারেননি। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন স্বয়ং মদন। শুধু রাজ্য়ে মন্ত্রীত্ব নয়, দলের বড় কোনও পদও সিবিআই তলব করার পর থেকে পাননি এই সংগঠক। এদিকে অনুব্রতর পর দলের মুখপাত্রের 'নিশানা'-য় মহাসচিব পার্থ চট্যোপাধ্যায়।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এসএসসি নিয়ে আদালতের নির্দেশে যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই তাঁরা সবাই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে দায়িত্বে ছিলেন। সব থেকে বড় কথা, পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে হাইকোর্টের বিচারপতির নির্দেশে, এমনকী সিবিআই নিজে থেকে তলবও করছে না। কাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে, কখন তাঁরা সিবিআই দফতরে যাবে তাও ঘোষণা করেছে আদালতই। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চক্রান্তও বলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করাও কঠিন বিষয়। তাহলেও সমস্ত পরিস্থিতি বিচার করে দল স্বয়ং মহাসচিবের সঙ্গে 'দূরত্ব' তৈরি করতে চাইছে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।

দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এসএসসির সিবিআই তদন্ত নিয়ে যে জবাব সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। কুণাল স্পষ্ট বলেছেন, 'ব্রাত্য বসু শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন এসব অভিযোগ ওঠেনি। তখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ওনাকে জিজ্ঞেস করুন।' রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রশ্নের জবাব দিতে না চাইছে অনায়াসে সেই পশ্নের জবাব এড়িয়ে যান সকলেই। তাছাড়া দলের অনুমতি ছাড়া জবাব দিতে পারে না মুখপাত্র। এক্ষেত্রে যে ভঙ্গিমায় দলের মহাসচিব প্রসঙ্গে কুণাল জবাব দিয়েছেন স্বভাবতই তা নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কী অনুব্রত মন্ডলের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়? অভিজ্ঞ মহলের মতে, এমন একটা অবস্থায় দল থাকতে চাইছে যাতে 'সাপও না মরে লাঠিও না ভাঙে'।

tmc Mamata Banerjee anubrata mondal cbi partha chatterjee Kunal Ghosh
Advertisment