টানা অরাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংযোগ বজায় রেখে চলেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর ছবি দিয়ে রাজ্য জুড়ে টাঙানো চলছে ব্যানার-ফেস্টুন। সোশাল মিডিয়ায় একাধিক গ্রুপ রয়েছে "আমরা দাদার অনুগামী"-দের। একদিকে যখন নন্দীগ্রামে জনসভার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে, ঠিক তখনই দাদার অনুগামীরা নতুন ওয়েব সাইটের লিঙ্ক www.dadaranugami.com নিয়ে এসেছে। যাঁরা দাদার সঙ্গে রয়েছে তাঁরা এই লিঙ্কে গিয়ে ক্লিক করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করাতে পারবেন। ১২ নভেম্বর থেকে লিঙ্ক সক্রিয় হয়ে যাবে। নন্দীগ্রামের নায়ক যে প্রকৃতই জননেতা তা প্রমান করতে মরিয়া দাদার অনুগামীরা।
লকডাউন থেকেই শুরু হয়েছিল জনসংযোগের অভিযান। মাঝে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজে সরাসরি কোথাও যেতে না পারলেও সক্রিয় ছিলেন তাঁর অনুগামীরা। চিকিৎসকের অনুমতি পেতেই ফের দৌঁড়ঝাপ শুরু করে দেন শুভেন্দু। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে নিজেকে আবদ্ধ না করে অন্য জেলাতেও নানা সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে কোথাও ছিল না তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা। ইতিমধ্যেই দলের একটা বড় অংশ সরাসরি শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এরইমধ্যে আগামিকাল মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। সেই সভার দিকেই সকলেরই লক্ষ্য রয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
নন্দীগ্রামে গোকুলনগরে সভার প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও অন্যতম উদ্যোক্তা অশোক করন বলেন, "প্রস্তুতি প্রায় শেষ। তিনটে মঞ্চ, গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, সমস্ত গেটে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকছে। আমরা আশা করছি মঙ্গলবারের সভায় লক্ষাধিক লোক আসবেন। মাঠে ৫০ হাজারের ওপর লোক হবে। আগতদের জন্য পাশে আর আকটা মাঠের ব্যবস্থা রয়েছে। এলইডি থাকছে ৬টা। অন্য জেলা থেকেও একাধিক গাড়িতে মানুষ আসবেন সভা শুনতে।"
আরও পড়ুন- অবদান ভুলে শুভেন্দুকেই ছেঁটে ফেলছেন মমতা, জল্পনা বাড়িয়ে মন্তব্য অধীরের
বিগত কয়েক মাস ধরেই সতর্ক বার্তা দিয়ে আসছেন শুভেন্দু অধিকারী। কখনও বলেছেন অতীত ভুললে ভবিষ্যত অন্ধকার, কখনও বলেছেন সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উপরে উঠেছি। লিফটে উঠিনি। যদিও এখনও পর্যন্ত দলের বিপক্ষে কোনও কথা বলেননি তিনি। তবে যাঁরা তাঁকে সমালোচনা করেছেন তাঁদের ছোটলোক বলতেও ছাড়েননি। মানুষকে কুকুর কামড়ানোর সঙ্গে তাঁদের তুলনা টেনেছেন। পরবর্তীতে বেশ কিছু জেলাতেও সফর করেছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের জেলা কমিটি ঘোষণার পর রাজ্যে দলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। জানা গিয়েছে, দলের এই অংশ শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁদের অনেকেই কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে হাজির হবেন নন্দীগ্রামে।
নন্দীগ্রামের সভায় কী বার্তা দেবেন শুভেন্দু? সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে ডান-বাম সব পক্ষই। অমিত শাহ থেকে দিলীপ ঘোষ প্রত্যেকেই শুভেন্দুর বিজেপি যোগ নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিতে চেয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশ আবার নতুন মঞ্চ নিয়ে জল্পনায় ব্যস্ত। কিন্তু আদপে কী করতে চলেছেন শুভেন্দু তা এখনই স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তবে এটা একেবারেই পরিস্কার জননেতা হিসাবে তিনি কতটা গ্রহণযোগ্য তা পরোখ করে নিতে চাইছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। মঙ্গলবারের সভায় নানা জেলা থেকে কয়েক হাজার ছোট-বড় গাড়িতে আসবেন অনুগামীরা। শুভেন্দুর অনুগামী এক তৃণমূল নেতার কথায়, "দল তো শুভেন্দুর নন্দীগ্রামের জনসভায় যাওয়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। উনি তো তৃণমূলের বিধায়ক, রাজ্যের মন্ত্রী। তাঁর সভায় যাওয়া নিয়ে সমস্যা কোথায়।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন