পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের একবছর বাকি। তার আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বিজেপি-শিবসেনা সরকার মহারাষ্ট্রে থেকে গেল। কাগজে-কলমে এতে তাদের সুবিধাই হল। কিন্তু, তারমধ্যেও একনাথ শিণ্ডে ও দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সরকার যেভাবে গঠিত হয়েছিল, সে সম্পর্কে কড়া বার্তা দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যা মহারাষ্ট্রের মহাবিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ) জোটের বিরাট মনোবল বাড়িয়েছে।
মহারাষ্ট্রের বর্তমান টালমাটাল রাজনীতিতে শিবসেনা উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে (ইউবিটি), এনসিপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সন্দেহের ভাব তৈরি হয়েছে। এই টানাপোড়েন এবং উত্তেজনা দূরে সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন রাজ্যপালকে ভর্ৎসনা অন্য পরিবেশ তৈরি করল। গালাগালিকে যেন গলাগলিতে বদলে দিল।
টেকনিক্যালি বলতে গেলে, সুপ্রিম কোর্ট শিণ্ডে সেনা গোষ্ঠীর ১৬ জন বিধায়কের ভাগ্য নির্ধারণের বল মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার রাহুল নার্ভেকারের কোর্টে পাঠিয়েছে। এই ১৬ বিধায়ককে অযোগ্য ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিল উদ্ধবের সেনা (ইউবিটি)। নার্ভেকার একজন বিজেপি নেতা। তাই তিনি ঠিক কী সিদ্ধান্ত নেবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যদি তিনি ১৬ বিধায়ককে অযোগ্য ঘোষণাও করেন, মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিধায়কের সংখ্যা কমে ২৮৮ থেকে হবে ২৭২। তাতেও বিজেপি-সেনার হাতে সরকার চালানোর মত যথেষ্ট বিধায়ক সংখ্যা থাকবে।
কিন্তু, মজার ব্যাপার হল যে এই ১৬ বিধায়কের একজন হলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। উদ্ধবের সংগঠন চায়, তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হোক। কিন্তু, শিণ্ডে অযোগ্য ঘোষণা হলে মহারাষ্ট্রে বিজেপি-সেনার সরকারও টিকবে না। তাই, নার্ভেকার আদৌ বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সেসব বুঝেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ জানান, এই আদেশ আসলে তাঁদের জয়।
আরও পড়ুন- ‘অনাস্থা ভোট যুক্তিহীন’, রাজ্যপালকে সুপ্রিম ভর্ৎসনা, তবে মহারাষ্ট্রের কুর্সিতে ফেরানো যাবে না উদ্ধবকে
ফড়নবিশ বলেন, 'সত্যমেব জয়তে (সত্যের জয়)। সরকারের সাংবিধানিক ও আইনি বৈধতা আবার নিশ্চিত হল। কারণ, আদালত বলেছে, যে তারা এমভিএ সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর কথা ভাবতে পারছে না। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সেই সময়ে ফ্লোর টেস্টের মুখোমুখি না-হয়ে, নিজেই পদত্যাগ করেছিলেন।'