লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের দীক্ষা নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কর্নাটক সফরে তিনি এই দীক্ষা নিলেন। লিঙ্গায়েত কর্ণাটকের বৃহত্তম সম্প্রদায়। দু'দিনের সফরে রাহুল কর্ণাটকে গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের দীক্ষা নেন। অবশ্য দীক্ষা নিতে নয়। রাহুলের কর্ণাটক সফরের উদ্দেশ্য ছিল সম্পূর্ণই রাজনৈতিক। তার একটি হল দলের সিদ্দারামাইয়া আর ডি শিবকুমার গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের অবসান। আর দ্বিতীয়টি হল, লিঙ্গায়েত গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছনো।
তার মধ্যেই চিত্রদুর্গা অঞ্চলের মূরগা মঠ পরিদর্শনে যান রাহুল। সেখানেই তিনি লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের দীক্ষা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই অনুযায়ী তাঁকে দীক্ষা দেওয়া হয়। দীক্ষার অংশ হিসেবে রাহুলকে ঈশ্বরের প্রতীক রূপে ইষ্টলিঙ্গ দেওয়া হয়। যা কংগ্রেস নেতা গলায় ধারণ করেন। এই ইষ্টলিঙ্গ সাধারণত লিঙ্গায়েত পরিবারের শিশুদের নামকরণের সময় পরানো হয়। তবে কোনও ব্যক্তি যদি লিঙ্গায়ের ধর্ম গ্রহণ করেন, তাঁকেও এই সুতো পরিয়ে দেওয়া হয়। এই সুতো সমতা, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং মূল্যবোধের পরিচয় বলে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের দাবি।
দীক্ষাগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর রাহুল বলেন, 'শ্রী জগৎগুরু মুরুগারাজেন্দ্র বিদ্যাপীঠে যাওয়া এবং ডক্টর শ্রী শিবমূর্তি মুরুগা শরণারুর থেকে ইষ্টলিঙ্গ দীক্ষাগ্রহণ একটি পরম সম্মানের বিষয়।' লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে শরীরে ইষ্টলিঙ্গ ধারণই লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের প্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মানুষ্ঠান।
আরও পড়ুন- ইডি আর পুলিশ দিয়ে কংগ্রেসকে ভয় দেখানো যাবে না, প্রতিবাদের রাস্তায় গর্জে উঠলেন রাহুল
ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ, অফিসার-কেরানি, ডিরেক্টর-অফিস বয়, সাদাকালো নির্বিশেষে যে কোনও মানুষ এই দীক্ষা নিয়ে লিঙ্গায়েত হতে পারেন। লিঙ্গায়েতরা একেশ্বরবাদী এবং এক ঈশ্বরের উপাসনা করেন। লিঙ্গায়েতদের লিঙ্গ হচ্ছেন শিব। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি। সর্বজনীন চেতনা। তবে, লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের কাছে শিব কোনও পৌরাণিক দেবতা নন। তিনি হলেন নিরাকার ঈশ্বর।
লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা বাসভান্না। তিনি ব্রাহ্মণদের উপনয়ন বা উপবীত ধারণের অনুকরণে দ্বাদশ শতকে ইষ্টলিঙ্গ পরিধানের প্রচলন করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে পাঁচ দশকের পুরোনো হিরেমঠ সংস্থান ভালকি আশ্রমের প্রধান ডক্টর বাসবলিঙ্গ পট্টদেভারু বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি যে কোনও সম্প্রদায়ের সদস্য একজন ধর্মীয় গুরু হতে পারেন। একজন ব্যক্তি একবার লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের অংশ হয়ে গেলে, সে সেই সম্প্রদায়ের বিশ্বগুরু হতে পারেন। লিঙ্গায়তদের মধ্যে পুরুষদের সমান নারীদেরও অধিকার রয়েছে। চাইলে তারাও বিশ্বগুরু হতে পারে।'
Read full story in English