চড়চড় করে বাড়ছে পেট্রোল ডিজেল সহ জ্বালানির দাম। তারই প্রতিবাদে চলতি মাসের ১০ সেপ্টেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দিল কংগ্রেস। এখন অবধি যা জানা গেছে, ভারত বন্ধ চলতে পারে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত। এই বন্ধের ডাক শুধু কংগ্রেসের নয়, একে একে যোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার-বিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দল। সমাজবাদী পার্টি থেকে DMK ও NCP সকলেই কংগ্রেসের নেতৃত্বে ভারতবন্ধের ডাকে সহমত হয়েছে। বামপন্থী দলগুলি এক না হলেও ওই একই দিনে পৃথক বন্ধের ডাক দিয়েছে। তৃণমূল এদিন পেট্রোল, ডিজেল-সহ জ্বালানির দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে বলে আগাম বার্তা দিয়েছে।
কংগ্রেসের অশোক গেহলট এবং আহমেদ প্যাটেল, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সিতারাম ইয়েচুরি এবং NCP-র তারিক আনোয়ার সহ বেশ কয়েকজন বিরোধী দলনেতা বিদ্রোহী জেডি (ইউ) নেতা শারদ যাদবের বাসভবনে মিলিত হয়ে এই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। সূত্রের খবর, এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক রাজ্যগুলির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা এবং PCC সভাপতিগণ এই কর্মসূচিকে চূড়ান্ত মাত্রা দিতে জোট বেঁধেছেন। RJD, NCP, JD(S), JVM এবং JMM-এর মত দলগুলিও ভারত বন্ধকে জোরালো করতে এগিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন: ঊর্ধ্বমুখী দামে নতুন রেকর্ড পেট্রোল-ডিজেলে
"বেশির ভাগ দলই সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু তিন বা চারটি দল নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। আমরা এখনো BSP-র সঙ্গে কথা বলিনি। তৃণমূল কংগ্রেসও আমাদের এই কর্মসূচীতে সম্মতি দিয়েছে," এআইসিসি প্রধান আহমেদ প্যাটেল জানান সাংবাদিকদের। অশোক গেহলট বলেন এই বন্ধ জনগণকে আরও উস্কে দেবে। কংগ্রেস নাগরিক সংগঠন এবং এনজিওদের কাছে বন্ধে যোগদানের জন্যও আবেদন জানিয়েছে।
শারদ যাদব বলেন, প্রায় সকল বিরোধী দলই এই বন্ধে সম্মত হয়েছে। কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিজেপি সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু যে পেট্রোল, ডিজেল-সহ জ্বালানির দাম বেড়েছে এমনটা নয়, পাশাপাশি অরাজকতা দেখা দিয়েছে এই দেশে। গরু সুরক্ষার নামে দৈনিক হত্যা, গণপ্রহার, ও জীবিকা অর্জনে কৃষকদের অনেক ক্ষতি করেছে বর্তমান সরকার।
আরও পড়ুন: শহর জুড়ে ‘ব্রিজ আতঙ্ক’, দেখুন কী হাল শহরের অধিকাংশ সেতুর
রোজ একটু একটু করে বেড়েই চলেছে পেট্রোল ডিজেলের দাম। শুক্রবার সকালে দেশের মেট্রো শহরগুলোর প্রতিটাতেই পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেড়ে নতুন রেকর্ড ছুঁল। কলকাতা শহরে পেট্রোলের দাম আজ সকাল থেকে ৮২ টাকা ৫২ পয়সা/ লিটার। পিছিয়ে নেই ডিজেলও। লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ৭৪ টাকা ৫০ পয়সা।
অন্যদিকে ডিজেল এবং পেট্রোলের আকাশছোঁয়া দাম প্রসঙ্গে পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রবিবার বলেন, এই মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদী নয়। তিনি আরও বলেন, ‘‘ওপেকের আওতায় পড়া দেশগুলো দৈনিক ১০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন বাড়ানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা রাখতে পারেনি। স্বভাবতই চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় বাড়ছে তেলের দাম। এছাড়া ভেনেজুয়েলা, ইরানের মতো দেশে সংকটের কারণেও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব পড়ছে।”