ভারত-পাক ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে ছিলেন। গ্যালারিতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা যখন মেজাজে ব্যাট করছিলেন, গ্যালারিতে তাঁকে নেচে-কুঁদে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। সেই মানুষটাকেই যখন ভারতের জাতীয় পতাকা ধরতে এগিয়ে দেওয়া হল, অমনি তাঁর আচমকা মনে পড়ে গেল যে তিনি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান। কোনও একটি দেশের জাতীয় পতাকা ধরা তাঁর উচিত না। আর, তাই তিনি এগিয়ে দেওয়া ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে তুলতেও চাইলেন না।
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সচিব জয় শাহর এই আচরণ ইতিমধ্যেই নেটিজেনদের তোপের মুখে। ওই ঘটনার কিছু পরে, রবিবার রাত থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শাহর জাতীয় পতাকা ধরতে না-চাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের সঙ্গে মিলে শাহর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সোমবার কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এই আচরণের জন্য জয় শাহর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক।
তবে, শুধু অভিষেকই না। জয় শাহর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন শিব সেনার নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীও। এই ব্যাপারে প্রিয়াঙ্কার টুইট, 'এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে নিরপেক্ষ থাকার অর্থ জাতীয় পতাকার অবমাননা হতে পারে না। তা-ও, আবার নিজের দেশের জাতীয় পতাকার প্রতি! ১৩৩ কোটি ভারতীয়কে অপমান করেছেন শাহ।' জয় শাহর বাবা অমিত শাহ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রের মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় সেকেন্ড ইন কমান্ড। বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা। যে বিজেপি এবং মোদী সরকার দেশবাসীকে দেশপ্রেমের শিক্ষা দেয়। সম্প্রতি, সেই দেশপ্রেমের শিক্ষা দিতেই 'হর ঘর তিরঙ্গা' কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিজেপি তথা মোদী সরকার। সেই বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলেই কি না, জাতীয় পতাকা অবমাননা করলেন? সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন- ‘জাতীয় পতাকার অবমাননা জয় শাহের’, অমিত-পুত্রকে বেনজির আক্রমণ অভিষেকের
কংগ্রেসের তরফে দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ কটাক্ষ করে টুইট করেছেন, 'আমারও বাবা আছে। তিরঙ্গা আপনার কাছেই রাখুন।' কংগ্রেস নেতা অজয় কুমার টুইট করেছেন, 'মনে হয় পতাকাটি খাদির ছিল, পলিয়েস্টার নয়।' তৃণমূল নেতা ডেরেক ও' ব্রায়েন লিখেছেন, 'প্রিয় অমিত শাহ, দয়া করে দেশবাসীকে বলুন, এই কাজটি আপনাকে বিরক্ত করেছে কি না? এই ঘটনা আপনার জাতীয়তাবোধে আঘাত করছে কি না? নাকি, সে আপনার ছেলে বলেই এই কাজ মাফ হয়ে যাবে? আমরা অজুহাত খুঁজছি না। একজন ক্ষুব্ধ ভারতীয় হওয়ায় সুনির্দিষ্ট উত্তর খুঁজছি। সেটাও আন্তরিকভাবে।'
Read full story in English