গত ৭ বছরে রাজ্যে রাজনৈতিক খুন প্রায় হয়নি বলে শুক্রবার দাবি করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল মহাসচিবের এই মন্তব্যের দিনেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবারও রক্ত ঝরল এ রাজ্যে। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক নির্দল প্রার্থীর সমর্থকের। এই প্রসঙ্গে অভিযোগের আঙুল উঠেছে ভাঙড়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তবে এ ঘটনা সামনে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তৎপরতা দেখিয়েছে রাজ্য সরকার। এই ঘটনার ঠিক পরপরই আরাবুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দল প্রার্থীর সমর্থককে খুনের অভিযোগে শুক্রবার সন্ধের পরে আরাবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। যদিও আরাবুলের গ্রেফতারি নিয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত পুলিশের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন, গত ৭ বছরে রাজ্যে রাজনৈতিক খুন প্রায় হয়নি, দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের
নির্দল প্রার্থী ইশরাফিক মোল্লার মিছিলে হাঁটছিলেন বছর আঠাশের হাফিজুর রহমান। ওই মিছিল লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মিছিল চলাকালীন এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় হাফিজুরের। তৃণমূল নেতা আরাবুলের দলবলরাই এ কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নির্দল প্রার্থীর সমর্থকরা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই নির্দল সমর্থককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। নতুনহাটি বাজারের কাছে আরাবুলের লোকেরা তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ করেছেন জমি, জীবিকা, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা কমিটির মুখপাত্র হাসান মির্জা। ঘটনাস্থলে ছেলে ও ভাইয়ের সঙ্গে আরাবুল ইসলামও ছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি। জমি, জীবিকা, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা কমিটির ব্যানারেই ভোটে লড়ছেন মোল্লা। ভাঙড়ে পাওয়ার প্রজেক্টের বিরোধিতায় ২০১৬ সাল থেকে লড়াই চালিয়ে আসছে এই কমিটি।
আরও পড়ুন, ভোটে অতিরিক্ত হিংসা হলে বেতন কাটা হবে আধিকারিকদের, বাজেয়াপ্ত হতে পারে সম্পত্তিও, জানিয়ে দিল আদালত
হামলাকারীদের উপর সরকারের সক্রিয় সমর্থন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভাঙড়ে জমি আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তী। এ ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন যে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা শেষ হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: অবশেষে জট কাটল, ১৪ মে-তেই ভোট, জানাল নির্বাচন কমিশন
অন্যদিকে বৃহস্পতিবারই পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায় যে, ২০১৩ সালের থেকে এবার ভোটে বেশি সন্ত্রাস হলে, নিরাপত্তার রিপোর্ট যাঁরা দিয়েছেন, তঁদের বেতন থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাঁদের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।