রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ ফের ঝুলেই রইল। ১৪ মে পঞ্চায়েত ভোট হবে কিনা, সে ব্যাপারে আজও কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হল না। কবে ভোট হবে, তা সম্ভবত মঙ্গলবার জানা যাবে। পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে মঙ্গলবার। অন্যান্য বেঞ্চে পঞ্চায়েত মামলার যে শুনানি চলছে, সেই মামলাগুলির রায় দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
এদিকে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ফের হাইকোর্টে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চ। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার সঙ্গে অরাজনৈতিক ভাবে নিজেদের কাজ চালাবে, এমনটাই প্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছে আদালত। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে যেভাবে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, তাকে অবাঞ্ছিত বলে বর্ণনা করেছেন বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এটা কমিশনের জন্য ‘ওয়েক আপ কল’। মনোনয়ন সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের বেঞ্চ জানান, এ ব্যাপারে আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: ১৪ মে নির্বাচন ঘিরে জট, মঙ্গলে ফের শুনানি, হাইকোর্টে ধাক্কা কমিশনের
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী ঋজু ঘোষাল বলেন , ‘‘ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে।’’ তিনি আরও বলেন যে, সাংবিধানিক সংস্থার কাজকর্ম সংবিধান মোতাবেক হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছে আদালত। ঋজু জানান, ‘‘বেশ কিছু ক্ষেত্রে কমিশন পঞ্চায়েত আইনের অপব্যাখ্যা করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।’’
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: মনোনয়নপর্বে অশান্তি নিয়ে ট্যুইট যুদ্ধে সুজন-অভিষেক
বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট গভীর জলে, এজন্য দায়ী কমিশন, প্রশাসন ও তৃণমূল।’’ তিনি আরও বলেন যে, কমিশন তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। প্রতাপ জানান, মঙ্গলবারই জানা যাবে কবে ও ক’দফায় ভোটগ্রহণ হবে। এদিন ফের নিরেপক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, ‘‘যেদিন ভোট করতে বলা হবে, সেদিনই আমরা ভোটের জন্য প্রস্তুত। একদিনেও ভোট করতে তৈরি আছি আমরা। তবে ভোট হতে হবে নিরপেক্ষভাবে।’’
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: ধর্মতলায় ২ দিনের ধরনা কর্মসূচি বামেদের
এর আগে ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কোনও আলোচনা ছাড়াই নির্বাচনের দিন ঘোষণা করায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছিল বিরোধী শিবির। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিপিএম ও পিডিএস। পরে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ জানায় যে, ১৪ মে ভোটগ্রহণের যে দিন ঘোষণা করা হয়েছে, তা কমিশনের প্রস্তাবমাত্র। আগে ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খতিয়ে দেখতে চায় আদালত। নিরাপত্তা নিয়ে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা রিপোর্ট আকারে কমিশনকে ডিভিশন বেঞ্চে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।