এখনও প্রায় দু’সপ্তাহ বাকি পঞ্চায়েত ভোটের। কিন্তু ইতিমধ্যেই ৩৪ শতাংশেরও বেশি আসন দখল করে নিয়েছে শাসকদল বলে দাবি করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সদ্য প্রকাশিত একটি রিপোর্ট। এই সমস্ত আসনগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজেদের ক্ষমতা অটুট রাখছে তৃণমূল নেতৃত্ব। অর্থাৎ, ওই আসনগুলিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি কোনও প্রার্থীই দিতে পারেনি।
মোট ৫৮ হাজার ৬৯২টি আসনের মধ্যে ২০ হাজার ৭৬টি আসনে বিনা লড়াইয়ে জয়লাভ করেছে তৃণমূল শিবির। যা এককথায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গত ৪০ বছরে দু’বার মাত্র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনের সংখ্যা ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। ২০০৩ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ১১ শতাংশ এবং ২০১৩ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনের হার ছিল ১০.৬৬ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এবারের পঞ্চায়েত ভোটের আগের সূচি অনুযায়ী, এ সংখ্যা ছিল ২৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: বিজেপি প্রার্থীর আত্মীয়কে ধর্ষণের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন যে, পঞ্চায়েত ভোট প্রহসন হয়ে গেছে। রাজ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন যে, বিরোধী প্রার্থীরা যদি মনোনয়নপত্র জমাও দিতে না পারেন, তবে ভোট নামের প্রহসন চালিয়ে লাভ কী?
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ওরা আসলে চায় না বাংলায় কোনও বিরোধী দল থাকুক।’’ এ প্রসঙ্গে অধীর আরও বলেন যে, ওরা সন্ত্রাসের মাধ্যমে রাজ্য থেকে বিরোধীদের শেষ করে দিতে চাইছে। তাঁর অভিযোগ, যাঁরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাঁদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে অথবা আক্রমণ করা হচ্ছে, । বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: রাজ্যের প্রস্তাব মতোই ১৪ মে একদফায় ভোট, গণনা ১৭ মে
আগামী ১৪ মে এরাজ্যে একদফাতেই পঞ্চায়েত ভোট। নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে আগামী ১৭ মে। এ বছর, প্রথমে তিন দফায় ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের আগের বিজ্ঞপ্তিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল ১, ৩ ও ৫ মে। কিন্তু ভোটের দিন ঘোষণার পর মনোনয়নপত্র পেশ করা ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়ায়। এরপর কয়েকদফায় পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম। মাঝে হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ ও ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট। শেষমেশ হাইকোর্টের নির্দেশ ভোটের নয়া নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে কমিশন। কিন্তু কমিশনের নয়া বিজ্ঞপ্তি ঘিরেও আপত্তি তুলেছে বিরোধীরা। একদফায় ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধীরা।