তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনৈতিক খুন কাকে বলে তা প্রায় ভুলেই গেছেন বলে দাবি করলেন দলের মহাসচিব। এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে তুলোধোনা করেন তিনি। তাঁর তোপের মুখে যেমন পড়েছে বিজেপি-বামেরা, তেমনই বাদ যায়নি পিডিএসের মতো দলও।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আরও একবার বিরোধীদের কার্যত একহাতে নিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিশেষত, রাজ্যের অন্যতম বিরোধী মুখ বিজেপি-র নাম না করে এদিন ফের কটাক্ষের সুর চড়ালেন পার্থ। শুক্রবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ বলেন, ‘‘সামান্য কারণেই বিরোধীদলের নবাগত বন্ধু বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।’’ এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব অভিযোগ করেন, কুভাষা ছড়িয়ে বাংলার সংস্কৃতিকে কলুষিত করা হচ্ছে। পদ্মশিবিরকে কটাক্ষ করতে গিয়ে বামেদেরও নিশানা করেছেন পার্থ। তিনি বলেন যে, এতদিন ধরে যারা সরকারে ছিল তারাই অদ্ভুত ভাবে নবাগত রাজনৈতিক বন্ধুকে প্রকাশ্যে বা পিছন থেকে মদত দিচ্ছে। ‘‘হামলাবাজ, দাঙ্গাবাজ, ভাঁওতাবাজ, সব এক হয়েছে’’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: অবশেষে জট কাটল, ১৪ মে-তেই ভোট, জানাল নির্বাচন কমিশন
পঞ্চায়েত ভোটে মামলা জটিলতা নিয়েও এদিন ফের বিরোধীদের উদ্দেশে তোপ দাগেন পার্থ। এদিন তৃণমূলের মহাসচিব বলেন, ‘‘হামলা-মামলা, জোট-ঘোঁট-ফোট করে বিরোধী বন্ধুরা ভোট বিলম্বিত করতে চেয়েছিলেন, ভোট বন্ধ করতেও চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত মানুষের কাছে পরাজিত হয়েছেন।’’ পিডিএসের দিকে তোপ দেগে এদিন পার্থ বলেন, একটি নির্বাচনে কখনও আসন না পাওয়া একটি ছোট দল কোর্টে গিয়েছে মামলা করতে। বিরোধীরা শুধু চেয়ার সামলাতে ব্যস্ত বলেও তোপ দাগেন পার্থ।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: বিজেপির সঙ্গে কোনও জোট নেই, জানালেন বিমান বসু
অন্যদিকে, বিরোধীদের আক্রমণের পাশাপাশি দলের উন্নয়ন নিয়ে জোর সওয়াল করেন পার্থ। এদিন প্রেস ক্লাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্তাবকতা নয়, এটা সত্য যে গত ৭ বছরে মুখ্যমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে পশ্চিমবাংলায় নতুন উন্নয়নের রক্ত সঞ্চালন হয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে পার্থ বলেন যে, গত ৭ বছর প্রতিটি জেলায় অন্তত ১০ বার করে সর্বস্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে বৈঠক রাজনৈতিক নয়, উন্নয়নের জন্য। এ প্রসঙ্গে পার্থর দাবি আর কোনও মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নের জন্য এভাবে সচেষ্ট হননি। পিছিয়ে পড়া বাংলাকে সামনের সারিতে আনাই এ সরকারের লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেন পার্থ।
আরও পড়ুন, ভোটে অতিরিক্ত হিংসা হলে বেতন কাটা হবে আধিকারিকদের, বাজেয়াপ্ত হতে পারে সম্পত্তিও, জানিয়ে দিল আদালত
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে পার্থ বলেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা রয়েছে বলেই মানুষ মমতার উপর আস্থা রেখেছে। তৃণমূল মহাসচিবের দাবি, গত ৭ বছরে রাজনৈতিক খুন প্রায় হয়নি বললেই চলে। রাজ্যে গন্ডগোল এড়ানোর জন্য যে তাঁদের সরকার সচেষ্ট, সেকথাও এদিন জানিয়ে দেন পার্থ।