জল্পনা সত্যি করে শেষ পর্যন্ত রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দল ছাড়তে পারেন বলেই জানা যাচ্ছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দল ছাড়া নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া এল শাসক দল তৃণমূলের তরফে। ডোমজুড়ের বিধায়ক মন্ত্রিত্ব ছাড়ায় জোড়া-ফুলের কোনও অসুবিধা হবে না বলেই মত শাসক দলের নেতাদের।
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, 'নিশ্চয়ই কোনও অসুবিধা হচ্ছিল। তবে আমি বলব, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। একদিন তাঁরা ঠিক বুঝবেন। কোনও কর্মী তো দল ছাড়ছেন না। কর্মীরাই দলের সম্পদ। আমরা জানি দলের ইঞ্জিন মমতা ব্যানার্জী। বট গাছ থেকে দু-একটা পাতা ঝরের পড়লে কোনও ক্ষতি হয় না।' একই সঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ করে পার্থবাবু বলেন, 'এ রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষমতা এমনই যে অন্য দল থেকে নেতা ভাড়া করতে হচ্ছে।'
সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'সব ভোগ এখন দল ছাড়ছেন- রাজীব বেইমান। দল আরও দৃঢ় হল। ভোটের আগে যাঁরা যেতে চাইছেন তাঁরা দল থেকে বেরিয়ে যান। কীসের অভিমান ওঁর? আমরা ৮৪ থেকে দল করছি, এখনও মন্ত্রিত্ব করিনি। আমরা তো কথা বলেছিলাম, ববির (ফিরহাদ হাকিম) সঙ্গে ও তো কায়দা করে কথা বলতে চায়নি। ওই সমস্যা মেটাতে রাজি ছিল না।'
মন্ত্রীর পদত্যাগ নিয়ে বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘উনি যে মন্ত্রিত্ব, দল ছাড়বে সেটা গত কয়েকদিন ধরেই বোঝা যাচ্ছিল। বোঝাবার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু উনি বুঝলেন না। এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’
আরও পড়ুন- ‘যতক্ষণ না তৃণমূল ছাড়ছে…’, রাজীবের ইস্তফা নিয়ে সাবধানী মন্তব্য দিলীপের
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যে যাবেন তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। ডোমজুড় কেন্দ্রে রাজীবকে ছাড়াই বড় ব্যবধানে জিতবে তৃণমূল।’
যদিও এদিন তাঁর ইস্তফার কারণ জানাতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু আড়াই বছর আগেই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রীই নিরস্ত করেছিলেন। সেই সময় আমাকে সেচমন্ত্রী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একবারও নেত্রী যোগাযোগ করে জানানোর সৌজন্য দেখাননি। আমি সেটা আশা করেছিলাম। তারপর আমাকে যখন যে দফতরে কাজ করতে বলেছেন সেটা করেছি। আর গত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত আমায়, আমারই কিছু সতীর্থ ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন। আমি পাল্টা কাউকে আঘাত করিনি। গত একমাস ধরে দ্বন্দ্বে ভুলছিলাম। আমি ভাবিনি এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও শেষ পর্যন্ত নিতেই হল।'
শেষ পর্যন্ত কী বিজেপিতে নাম লেখাবেন রাজীববাবু? সেই জবাব এদিন তিনি নিজে মুখে না দিলেও সেই সম্ভাবনাই ক্রমশ জোড়াল হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন