Advertisment

বঙ্গভঙ্গের জল মাপা চলছে, উত্তাপ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে

দলীয় সভাপতির বক্তব্যের পর দলীয় সাংসদ জন বার্লা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
John Barla, North Bengal

জন বার্লার বক্তব্য যে ব্যক্তিগত তাঁর কথায় স্পষ্ট। সেই দায় নেবে না দলীয় নেতৃত্ব।

উত্তাপ বাড়তে চলেছে উত্তরবঙ্গে। নীচু তলা থেকে দাবি উঠছে বলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা পৃথক রাজ্যের জন্য সরব হয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। তার পিছনে সন্ত্রাস, সীমান্ত এলাকা, অনুন্নয়নসহ একাধিক যুক্তি খাড়া করতে চেয়েছেন তিনি। যদিও পশ্চিমবঙ্গ দিবসে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। দলীয় সভাপতির বক্তব্যের পর দলীয় সাংসদ জন বার্লা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও হয়েছে।

Advertisment

উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আপাতত তা বাতিল হলেও পরবর্তীতে সেখানে তিনি যাবেন। এদিকে এই আবহেই এক সপ্তাহের জন্য আজ, সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গে থাকবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। স্বভাবতই উত্তরবঙ্গের সীমান্ত সমস্যা, অনুন্নয়নের দাবি ধনকরের সফরে উঠে আসতে পারে। অভিজ্ঞমহলের মতে, পৃথক রাজ্যের প্রশ্নে বিতর্ক ক্রমশ বাড়বে। উত্তাপও বাড়বে। তবে আম বাঙালী এই বঙ্গভঙ্গের সম্পূর্ণ বিপক্ষেই বলে তাঁদের অভিমত। সেই পরিস্থিতিতেই বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ দিবসে দিলীপ ঘোষের স্পষ্ট বক্তব্য, "বিজেপি বাংলা ভাগ চায় না।" জন বার্লার বক্তব্য যে ব্যক্তিগত তাঁর কথায় স্পষ্ট। সেই দায় নেবে না দলীয় নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন, সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে রাজ্যপাল, ‘হিংসা’র বিহিত চেয়ে ধনকড়ের দ্বারস্থ শুভেন্দু

উত্তরবঙ্গের নানান সমস্যা নিয়ে সরব হয়ে বিজেপি সাংসদ জন বার্লা পৃথক রাজ্য নিয়ে ধুনো দিলেও সেখানকার অধিকাংশ বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক তা সমর্থন করেননি। বিজেপি সূত্রে খবর, দিলীপ ঘোষের ঘোষণার পর জন বার্লা ঢোক গিলেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা ফোন করলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এসএমএসেরও জবাব দেননি বার্লা।

রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির আশানুরূপ ফল হয়নি। রাজনৈতিক মহলের মতে, একজন সাংসদ যখন জনগণের কথা বলে এমন গুরুতর দাবি তোলেন, তার নেপথ্যে বিশেষ কোনও কারণও থাকতে পারে। তাঁর দাবিকে সমর্থন না করেও উত্তরবঙ্গের বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এমন মন্তব্য করার জন্য দল তাঁকে শোকজও করেছে বলেও কোনও খবর নেই। যদিও এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু একজন গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রতিনিধি প্রকাশ্যে রাজ্যভাগের বিষয় উত্থাপন করেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। এর পিছনে ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে রুখতে মমতাকে পাশে চাইছেন বিরোধী নেতা!

উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান সীমানাতো রয়েছেই। চিনের সঙ্গেও সহজ যোগাযোগ রয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই অবস্থান রয়েছে। এটা নতুন কোনও বিষয় নয় বলেই অভিজ্ঞমহলের অভিমত। অভিজ্ঞমহল মনে করে, সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। বহু জায়গায় আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়াও নেই। এপার-ওপার করা খুব কঠিন নয়। বরং এসব বিষয়ে নজর দেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের আশু কর্তব্য।

 

বিজেপি সাংসদ ও বিধায়করা উত্তরবঙ্গের অনুন্নয়ন নিয়ে রীতিমত সংগঠিত হচ্ছে। এই নিয়ে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার বিজেপি সাংসদ ও বিধায়করা যৌথ কমিটিও গঠন করে ফেলেছেন। তবে বিজেপির এহেন অবস্থানে সিঁদুরে মেঘ দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্য ভাগের চক্রান্ত বলেই দাবি তৃণমূলের। গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও তা বর্ষার জন্য বাতিল হয়েছে। তবে আন্দোলনের নামে অশান্তি হলে ছেড়ে কথা বলবে না ঘাসফুল শিবির, কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

একদিকে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা ও কামতাপুরীদের একটা গোষ্ঠী পৃথক রাজ্যের বিষয়ে সরব। তার ওপর রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফর, পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর সফর। বিজেপির হুঙ্কার, তৃণমূলের হুঁশিয়ারি। এককথায় উত্তাপ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

north bengal BJP Leader bjp
Advertisment