Advertisment

পিকনিক পলিটিক্স: শীতে বাংলার রাজনীতিতে নতুন ধারার সূত্রপাত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গে অভিযুক্তদের অক্সিজেনের ঠিকানা এখন পিকনিকে।

author-image
Joyprakash Das
New Update
picnic politics in bengal bjp Led by Shantanu Thakur

গোবরডাঙার পিকনিকে শান্তনু ঠাকুর, সায়ন্তন বসু, জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারি।

নৈশভোজের আড্ডায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের বৈঠক নতুন কোনও বিষয় নয়। জাতীয় রাজনীতিতে একসময় এমন চর্চা বেশ প্রচলিত ছিল। মায় মধ্যাহ্ন ভোজ বা টি-পার্টিতেও রাজনৈতিক রণকৌশল স্থির করার জন্য নেতৃত্ব মিলিত হন। বাংলার রাজনীতিতে এবার নতুন ধারা পিকনিক বা চরৈভাতি। বণগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এই নতুন ধারার সূত্রপাত করে নিজের সাংসদীয় এলাকার সংগঠন মজবুত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গে অভিযুক্তরাও সেখানে অক্সিজেন পাচ্ছেন।

Advertisment

১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া পিকনিক সংস্কৃতি বঙ্গ রাজনীতিতে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। ওই দিন প্রথম পিকনিকের সূত্রপাত হয় গোপালনগর থানার রঘুনাথপুরে স্থানীয় মণ্ডলসভাপতি হরিশঙ্কর সরকারের বাড়িতে। সেখানে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। পাশাপাশি হাজির ছিলেন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া জয়প্রকাশ মজুমদার, রিতেশ তেওয়ারি ও সায়ন্তন বসু। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল সহ প্রায় শতাধিক নেতা কর্মী। সেদিনই শান্তনু জানিয়ে দিয়েছিলেন, বসে যাওয়া কর্মীদের উৎসাহিত করতে এই পিকনিকের আয়োজন। একইসঙ্গে মানুষের অভাব-অভিযোগ বা মনের কথা শোনার জন্যই এই সাংসদযাত্রা। প্রতি ব্লকে পিকনিক করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাধিপতি।

publive-image
ঠাকুরনগরের পিকনিকে বনগাঁর সাংসদ।

পিকনিকের মাধ্যমেই রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন বিজেপি সাংসদ। ইতিমধ্য়ে ৫টি পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছে বণগাঁ সংসদীয় এলাকায়। তারপর ২৩ শে জানুয়ারি রবিবার দুপুরে গোবরডাঙা পৌরসভার গৈপুরে পৌর এলাকার কর্মীদের নিয়ে পিকনিক করেন শান্তনু ঠাকুর। সেদিন অবশ্য কোনও রাজ্য নেতৃত্বকে দেখা যায়নি। সেদিনের পিকনিকে উপস্থিত ছিলেন, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল ও গোবরডাঙা পৌর মণ্ডলের সভাপতি আশীষ ব্যানার্জি সহ প্রায় দেড়শো নেতা কর্মী। এভাবেই এগিয়ে চলেছে পিকনিক রাজনীতি।

পরপর পিকনিক হয়েছে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংসদের নিজের মণ্ডল অর্থাৎ গাইঘাটা পূর্ব মণ্ডলের কর্মীদের নিয়ে ঠাকুরনগর ষষ্ঠীতলায় পিকনিক করেন শান্তনু ঠাকুর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল, গাইঘাটা পূর্ব মণ্ডলের সভাপতি দিবেন্দু মণ্ডল সহ দুইশতাধিক কর্মী। ওই দিন রাতেই কল্যাণীর সেন্ট্রাল পার্ক এলাকায় ফের পিকনিক করেন শান্তনু। সেখানে উপস্থিতি ছিলেন, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরসহ প্রায় তিন শতাধিক স্থানীয় নেতা-কর্মী। পরের দিন শুক্রবার গাইঘাটা পশ্চিম মণ্ডলের কর্মীদের নিয়ে পিকনিক করেন শান্তনু ঠাকুর। এদিনের পিকনিকে উপস্থিত ছিলেন, বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরসহ জেলা নেতৃত্ব ও কর্মীরা।

একেই শীতকাল। পিকনিকের মরসুম। যদিও করোনা পরিস্থিতি চলছে। সেই পিকনিককেই শান্তনু বেছে নিয়েছেন সংগঠন মজবুত করার হাতিয়ার হিসাবে। জনসংযোগ বৃদ্ধি করতে। প্রতিটি পিকনিকের মাঝে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক সেরে নিচ্ছেন শান্তনু। খোঁজ নিচ্ছেন কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধার। কর্মীদের একত্রিত হয়ে কাজ করার বার্তা দিচ্ছেন শান্তনু। বিজেপি সাংসদের ঘোষণা, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে কথা মাথায় রেখেই সাংসদ যাত্রার অঙ্গ এই পিকনিক। লোকসভার অধিবেশনের পর ফের পিকনিক সংস্কৃতি শুরু হবে বণগাঁ সংসদীয়, ঘোষণা করেছেন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে শীতের মরসুমে বাংলায় নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি বা ধারার সূত্রপাত করলেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। পিকনিক-রাজনীতি।

bjp Santanu Thakur Bengal BJP
Advertisment