ম্যান ম্যানেজমেন্টে তিনি বরাবরই অনবদ্য। তাঁর মত ভারতের অন্য কোনও প্রধানমন্ত্রী বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের এত কাছের মানুষ হয়ে উঠতে পারেননি। মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদী দেখালেন যে তিনি ঘরোয়া রাজনীতিতেও ম্যান ম্যানেজমেন্টে দড়। সংসদে চিনের আগ্রাসন ইস্যুতে গত কয়েক দিন ধরেই কংগ্রেস উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সেই উত্তাপে ঘি ঢেলেছে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের মন্তব্য।
নয়া কংগ্রেস সভাপতি অভিযোগ করেছেন, সংঘ পরিবারের দেশের স্বাধীনতায় অবদানই নেই। সেই সংঘ পরিবারের সদস্য বিজেপিই কংগ্রেস বা অন্যান্যদের দেশদ্রোহী বলে দাগাচ্ছে। এমন সংগঠন বা ব্যক্তিদের দেশদ্রোহী তকমা দিচ্ছে, দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে যাঁরা অগ্রগণ্য। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা খাড়গের এই অস্বস্তিসূচক প্রসঙ্গ উত্থাপনে স্বভাবতই আঘাত লেগেছে বিজেপির গায়ে। সঙ্গে, নিজেকে আদ্যন্ত দেশপ্রেমী প্রমাণ মরিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওপরও সেই আঁচ এসেছে।
অথচ, ২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। যেখানে দেশপ্রেমিক হিসেবে নিজেদের তুলে রেখেছে বিজেপি এবং মোদীকে ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করতে হবে। স্বভাবসিদ্ধ চাতুরিতে স্বভাবতই সংসদের অভ্যন্তরের সেই উত্তাপকে প্রধানমন্ত্রী সংসদের বাইরে দোস্তিতে বদলে দিলেন। মঙ্গলবারই তাঁকে দেখা গেল সংসদ কক্ষের বাইরে সংসদ প্রাঙ্গণে কংগ্রেস সভাপতি খাড়গের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিতে। যে টেবিলে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রমন্ত্রী জগদীপ ধনখড়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকেও।
আরও পড়ুন- কংগ্রেস সভাপতির কথায় তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন বিজেপি নেতারা, ব্যাপক হই-হল্লা
এই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর। মধ্যাহ্নভোজের নাম দেওয়া হয়েছিল বাজরার মধ্যাহ্নভোজ। কংগ্রেসশাসিত রাজস্থানে বাজরার খাবার অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিজেপির বিরুদ্ধে খাড়গে স্বাধীনতা ইস্যুতে যে অভিযোগ করেছিলেন, সেটাও প্রথমে করেছেন রাজস্থানেরই আলোয়ারে। ফলে, যেন এক ঢিলে দুই পাখি মারার মত খাড়গের অভিযোগকে স্রেফ রাজনীতির জন্য রাজনীতি প্রমাণ করে দিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী। সেটাও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার সঙ্গে স্রেফ একটেবিলে বসে খাওয়াদাওয়া করে।
এনিয়ে আবার টুইটও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। টুইটে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার অভিযোগকে স্রেফ রাজনীতির জন্য রাজনীতি হিসেবে তুলে ধরারও চেষ্টা করেছেন। চতুর প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, 'আমরা যখন ২০২৩ সালকে বাজরার আন্তর্জাতিক বছর হিসেবে চিহ্নিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছি, সংসদে একটি দুর্দান্ত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিলাম। যেখানে বাজরার খাবার পরিবেশন করা হল। দলমত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ দেখে ভালো লাগছে।'
Read full story in English