বেলুড় মঠের বক্তৃতায় সিএএয়ের সমর্থনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। নিশানা করেছেন বিরোধীদের। বেলুড় মঠের মতো আধ্যাত্মিক স্থানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মোদীর বক্তব্যের সমালোচনায় সরব রাজ্যের শাসক ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো। সাংবিধানিক পদাধিকারীর শালীনতার মাত্রা থাকা উচিত বলে মনে করেন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা।
রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'বেলুড় মঠের মত জায়গায় মোদী প্রধানমন্ত্রীর হিসাবে নয়, বক্তব্য রেখেছেন রাজনৈতিক নেতাদের মতো। সিএএ অসাংবিধানিক দাবি করে কোর্টে মামলা চলছে। কিন্তু, বিচারাধীন একটি বিষয়কেই পর্রচার করে তুলেছেন তিনি। ওনার চুপ থাকা উচিত।' তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'আধ্যাত্মিক স্থানে গিয়ে মোদীর রাজনৈতিক বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছি। মানুষ কিছুতেই সিএএ মেনে নেবে না।'
আরও পড়ুন: ‘যারা দেশবিরোধী স্লোগান তুলছেন তাঁদের জেলে যেতে হবে’, বিস্ফোরক শাহ
'বেলুড় মঠের সঙ্গে মানুষের বিশ্বাস, আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক বক্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল। কংগ্রেস এর নিন্দা করছে। সব কিছুতেই রাজনীতি টেনে আনা উচিত নয়। বক্তব্য পেশের সময় প্রত্যেকের শালীনতাবোধ বজায় রাখা উচিত।' বেলুড় মঠে মোদীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী।
মোদীর বাংলা সফর ঘিরে বিক্ষোভ করেন এসএফআই। সেখানেই যোগ দিয়েছিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহঃ সেলিম। তাঁর কথায়, 'সম্পূর্ণ বিষয়টিই দুর্ভাগ্যের।' সিএএ ও প্রস্তাবিত এনআরসি নিয়ে বিজেপি মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলেও দাবি করেন তিনি। আধ্যাত্মিক স্থানকে রাজনীতির আখড়ায় পরিণত করছেন প্রধানমন্ত্রী। বেলুড়ের সন্ন্যাসীরা প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মহঃ সেলিম।
আরও পড়ুন: নাম বদল বিতর্কে মোদী-মমতাকে এক সূত্রে গাঁথলেন সেলিম-সোমেন, প্রশ্ন তুললেন অভিষেকও
রবিবার বেলুড় মঠে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, 'সিএএ নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ায় জন্য নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।' বিরোধীদের নিশানা করে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'যা পড়ুয়া, যুব সম্প্রদায় বুঝতে পারছে তা অনেক প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বুঝতে পারছেন না। অনেকেই সিএএ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। যুব সমাজই ভারত নির্মাণের ভরসা। অনেক তরুণ সিএএ নিয়ে ভুল বুঝলেও তাদের সঠিকটা বোঝাতে হবে। এটা আমাদেরই কর্তৃব্য।' তাঁর কথায়,' সমস্যা দীর্ঘ দিন ফেলে রাখতে নেই। ভারত সরকার এই আইনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেই পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী ব্যবহার করা হয় তা স্পষ্ট হয়েছে।'
বিতর্কের মধ্যেই এপ্রসঙ্গে তাদের মতামত স্পষ্ট করেছে বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়েছে, 'মঠ সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন। এই বিষয়ে মঠের কোনও মতামত নেই।'
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নিন্দা করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। 'ঈশ্বরে অবিশ্বাসী' সিপিএমকে বেলুড় মঠ নিয়ে কোনও কথা আগবাড়িয়ে না বলার পরামর্শ দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের এই নেতা।
Read the full story in English