মোদী-মমতা, এই মুহূর্তে রাজনীতির ময়দানে এই দুই নামের মধ্যিখানে ‘বনাম’ শব্দটা জুড়ে গিয়েছে। রোজই একে অপরের বিরুদ্ধে চড়া সুরে আক্রমণ শানাচ্ছেন রাজনীতির এই দুই মহারথী। রাজনীতির আঙিনায় যতই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানান না কেন, মোদী-মমতার ব্যক্তিগত সম্পর্ক কিন্তু অনেকটাই ‘মধুর’, অন্তত এমনটাই জানালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বছরে নিয়ম করে কুর্তা-মিষ্টি পাঠান, বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমারকে দেওয়া এক ছকভাঙা সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন নমো।
ঠিক কী বলেছেন মোদী? ‘‘বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন? কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে?’’ খিলাড়ির এহেন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে হাসতে হাসতে ফুরফুরে মেজাজে মোদী বলেন, ‘‘এখন যদি বলি, ভোটের সময় আমার হয়রানি হবে, লোকসান হতে পারে। মমতাদি আজও বছরে একটা-দুটো কুর্তা নিজে পছন্দ করে পাঠান আমায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার সময় বাঙালির মিষ্টি নিয়ে কথা হয়। উনি ঢাকা থেকে আমার জন্য বিশেষ বাঙালি মিষ্টি পাঠান। এটা জানতে পেরে মমতাদিও আমায় বছরে এক-দু’বার বাঙালির মিষ্টি পাঠান।’’
আরও পড়ুন: সারদা-নারদার টাকায় প্রধানমন্ত্রীর পদ পাওয়া যাবে না: মোদী
বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক, অক্ষয় কুমারের এই প্রশ্নের জবাবে মোদী আরও বলেন, ‘‘বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রয়েছে। আমরা বছরে এক-দু’বার খাওয়া-দাওয়া করি। অনেক আগের কথা, তখন আমি মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম না। কোনও একটা কাজে সংসদে গিয়েছিলাম। গুলাম নবি আজাদের সঙ্গে আড্ডা মারছিলাম। আমাদের একসঙ্গে আড্ডা মারতে দেখে অবাক হয়ে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপানার একসঙ্গে আড্ডা মারছেন! এই কথায় গুলাম নবি দারুণ কথা বলেছিলেন যে, আপনারা বাইরে থেকে যা ভাবেন তা নয়। সকলেই পরিবারের মতো।’’
প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভা নির্বাচনে এবার মূলত মোদী বনাম মমতার লড়াই। দিল্লির ক্ষমতা থেকে মোদীবাহিনীকে হঠাতে উঠেপড়ে লেগেছেন মমতা। ‘বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও’ কিংবা ‘দু’হাজার উনিশ বিজেপি ফিনিশ’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন তৃণমূলনেত্রী। অন্যদিকে, মমতাকে রুখতে এবার বাংলায় বাড়তি নজর দিয়েছে পদ্মবাহিনী। লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় একের পর এক সভা থেকে মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন মোদী-শাহরা। রাজনীতির এমন প্রেক্ষাপটে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের ‘মিষ্টতা নিয়ে যেভাবে মুখ খুললেন মোদী, তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।