ইয়াস বৈঠকের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কলাইকুন্ডায় মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এরপর শুক্রবার দিনভর কেন্দ্রের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২৪ ঘণ্টা পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুরো ঘটনার বর্ণণা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করলেন, 'মিথ্য টুইটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দফতর আমাকে অপদস্থ করছে। আমার ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে।'
কী হয়েছিল সেদিন? তার ব্যাখ্যা দিয়ে গিয়ে শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'বৃহস্পতিবার জানতে পারি উনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) কলাইকুন্ডায় আসবেন। আমার প্রোগ্রাম তখন ঠিক করা হয়ে গিয়েছে। আমি সফরে কাটছাঁট করলাম। সাগরে গিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক, প্রশাসন ও এটিসি কন্ট্রোলের কাছ থেকে জানতে পারলাম আমাদের ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে সেখানে। প্রধানমন্ত্রীর বিমান নামলে তারপর আমরা ওড়ার অনুমতি পাব। ২০ মিনিট রাস্তায় অপেক্ষা করলাম। তারপর আরও ১০-১৫ মিনিট লাগল কলাইকুন্ডায় পৌঁছতে।’ মমতা আরও বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার প্রশ্ন। তাই আমি কিছু মনে করিনি।’ এরপরই মমতার প্রশ্ন, ‘তাহলে দোষটা তাহলে কার? কে অপেক্ষা করলো?'
আরও পড়ুন- “আপনার দুটো পায়ে ধরলে কি এবার খুশি হবেন?”, মুখ্যসচিবকে তলব বিতর্কে মোদীকে কটাক্ষ মমতার
তারপরই সেখানকার ঘটনার বিবরণ দেন মমতা। তাঁর কথায়, 'এসপিজিকে গিয়ে বিবেক সহায় আমাকে দেখার করানোর ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। যদিও এসপিজি বলে, এখন হবে না। বৈঠকের ঘরে কয়েকটা চেয়ার ফাঁকা ছিল। আমি আর আমার মুখ্যসচিব সেখানে যাই। গিয়ে বলি, আমাদের আরও অনেক জায়গায় যেতে হবে। আবহাওয়া ঠিক ছিল না। কলাইকুন্ডায় আসতে সমস্যা হচ্ছিল। তাও এসেছি। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ও আলাপনের দেখা হয়। আমি ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তুলে দিয়ে তাঁর অনুমতি নিয়ে চলে আসি।'
আরও পড়ুন- ‘লোকে টিকার জন্য অপেক্ষা করতে পারলে মোদীও না হয় দিদির জন্য অপেক্ষা করলেন’
প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কথা থাকলেও কেন পরে সেখানে রাজ্যপাল ও বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি শুক্রবার কলাইকুন্ডায় মোদীর ডাকা বৈঠক ক্রমশ রাজনৈতিক দলের বৈঠকে পরিণত হয়। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'মমতা বলেন, 'আমাকে বলা হয়েছিল পিএম-সিএম বৈঠক হবে। পরে পরিবর্তিত তালিকা আসে। সেখান দেখি গভর্নর আছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আছেন, বিধায়ক আছেন। বিজেপির সবাই আছেন আর আমি একা।' মমতার দাবি, বিরোধী দলনেতাকে যদি সম্মান দেওয়া হয়, তাহলে গুজরাটে বিরোধী দলনেতাকে ডাকা হয় না কেন? লোকসভায় বিরোধী দলনেতাকে সম্মান দেওয়া হয় না কেন?'
আরও পড়ুন- মমতার কালীঘাটের বাড়িতে সোনালি, মেটার পথে মান-অভিমান পর্ব?
বাংলার বিধানসভা ভোটে এবার বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। প্রচার পর্বে আশা জাগালেও ব্যর্থ বিজেপি। মুখ পুড়েছে মোদী-শাহর। তাই 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা' থেকেই পরিকল্পনা করে কেন্দ্র ও বিজেপি বাংলার ৭ বিরুদ্ধে কুৎসা করছে ও রাজ্য সরকারকে কাজে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর।
এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, 'পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে বললে তাই করব, যদি বাংলার মানুষের উপকার হয়। তবে বিনা কারণে অপদস্থ করবেন না। সচিবালয়ের কাজে বাধা দেবেন না।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন