/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/03/mamata-yogi-subendu.jpg)
উত্তরপ্রদেশের ভোটের ফলাফল নিয়ে যুযুধান দুই শিবিরের আকছাআকছি।
উত্তরপ্রদেশের ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই উত্তপ্ত বাংলা। দেশের সব থেকে বড় রাজ্যে ভোটগণনা আগামিকাল, আর উত্তেজনায় ফুটছে বাংলা। রাজনীতিতে কথা আছে উত্তরপ্রদেশ যার দেশ তার। বিজেপি এখনও এই তত্বেই ভরসা করছে। উত্তরপ্রদেশে কে জিতবে আর তার প্রতিক্রিয়ায় এরাজ্যে কী হবে, তা নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছে। মন্তব্য় করছেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী থেকে বিরোধী দলনেতা।
আগামিকাল, বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, উত্তরাখন্ড, মনিপুর ও পঞ্জাবে বিধানসভার ভোটগণনা। প্রায় প্রতিটি সংস্থাই এক্সিটপোলে উত্তরপ্রদেশে এগিয়ে রেখেছে বিজেপিকে। এই পাঁচ রাজ্য়ের মধ্য়ে গোয়ায় ক্ষমতায় আসার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরপ্রদেশে দুদফায় প্রচারে গেলেও গোয়ায় যাননি। গোয়ার ফল নিয়েও তৃণমূলের যে বিশেষ উচ্ছ্বাস নেই তা প্রচার চলাকালীন স্পষ্ট হয়েছে। এক্সিটপোলও বলছে ওই রাজ্যে লড়াই বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেস জোটের। তবে উত্তরপ্রদেশের ফল নিয়ে এরাজ্যের তৃণমূল ও বিজেপি নেতাদের বিশেষ কৌতুহল রাজনৈতিক মহলেও নজর কেড়েছে।
উত্তরপ্রদেশের ফলাফল নিয়ে বিরোধীদের চর্চা যে তৃণমূলনেত্রীর কর্ণগোচর হয়েছে তা মঙ্গলবারের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট হয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেছেন, ওরা বলছে উত্তরপ্রদেশে জিতলে নবান্নে ঝড় উঠবে। তারপর টানা বলে গিয়েছেন সেই ঝড়- টর্নেডোর প্রতিক্রিয়া। এদিকে বুধবার শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য়, উত্তরপ্রদেশের এক্সিটপোল যা বলেছে, আগামিকাল বিজেপি জিতবে। সেই ভয়ে রাজ্যপালের বক্তব্যের ওপর আলোচনা এদিনই শেষ করে দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয় হবে তাতে ভয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, একথাও বলতে ছাড়েননি শুভেন্দু। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশে যোগিজি মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন, সেক্ষেত্রে ভয়ের কী আছে। বরং তৃণমূল মনে করছে, এখন আর উত্তরপ্রদেশ তেমন ভাবে দেশের ভরকেন্দ্র নয়।
৪০৩টি বিধানসভা আসনের উত্তরপ্রদেশ জিততে মরিয়া বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে ছুটছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি। এক্সিটপোলেও তেমনই আভাস মিলেছে। এই রাজ্যেই দেশের সর্বাধিক ৮০টি লোকসভার আসন। অন্য রাজ্যের তুলনায় উত্তরপ্রদেশ থেকেই সব থেকে বেশি রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বিগত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি উত্তরপ্রদেশ থেকে সর্বাধিক আসনে জয় পেয়েছিল। আসন সংখ্যার বিচারে এই রাজ্যের গুরুত্ব রয়েছে তা স্বাভাবিক নিয়মেই মানতে বাধ্য রাজনৈতিক মহল। অভিজ্ঞ মহলের মতে, উত্তরপ্রদেশ দখলে রাখতে পারলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে মানসিকভাবেও অনেকটা চাঙ্গা থাকতে পারবে পদ্মশিবির। এই এক রাজ্যে জয়ের প্রচারে দেশজুড়ে ঝড় তোলার চেষ্টাও চলবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের ফল নিয়ে বিজেপির মাথাব্যথা তো রয়েছেই, সেখানে প্রার্থী না থাকলেও তৃণমূলের দৃষ্টিও রয়েছে গোবলয়ের ওই রাজ্যে। তৃণমূলনেত্রীর প্রচারে অংশ নেওয়া ও মঙ্গলবারের মন্তব্য সেকথাই জানান দিয়েছে। এদিকে উত্তরপ্রদেশের ফল ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। হিন্দীভাষী ওই রাজ্যের ফলফলে এরাজ্যের বিজেপির অক্সিজেনের যোগান বাড়বে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবিরের একাংশ। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই পুরো বিষয়টা স্পষ্ট হতে শুরু করবে।