Advertisment

একাধিক বৈঠকপর্বে শুরু মোদীর দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম দিন

মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধিরা। রাত সোয়া দশটায় রাষ্ট্রপতি ভবনে বৈঠকে বসেন মোদী এবং কিরগিজ প্রধানমন্ত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ শেষে একাধিক বৈঠকে মোদী। (প্রতীকি ছবি)। এক্সপ্রেস ফোটো- শশী ঘোষ।

প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ শেষে একাধিক বৈঠকে মোদী। (প্রতীকি ছবি)। এক্সপ্রেস ফোটো- শশী ঘোষ।

দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করলেন নরেন্দ্র দামোদারদাস মোদী। দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন প্রতিবেশী দেশ কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রীর শোরনবে জীনবেকভের সঙ্গে বৈঠক দিয়ে। বৃহস্পতিবার মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠান সাঙ্গ হতেই রাত সোয়া দশটায় রাষ্ট্রপতি ভবনে বৈঠকে বসেন মোদী এবং কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী।

Advertisment

গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথগ্রহণ করে আজ আমন্ত্রিত বিমস্টেকের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। সকাল ১০.৩০ নাগাদ হায়দ্রাবাদ ভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আব্দুল হামিদের সঙ্গে সারেন প্রথম বৈঠক। দ্বিতীয় বৈঠক শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মৈত্রীপাল সিরিসেনার সঙ্গে। এরপর একে একে আলোচনা-বৈঠক করবেন প্রতিবেশী রাষ্ট্র মরিশাস, নেপাল, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গেও। আধিকারিক সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রতিটি বৈঠকের সময় ২০ মিনিট করে ধার্য করা হয়েছে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, মোদী তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিমস্টেকের রাষ্ট্রনেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর পাশাপাশি মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাওয়ার গুরুত্বপূর্ন ইঙ্গিত দেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী শপথগ্রহণে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সার্ক গোষ্ঠীর নেতাদের, এবং সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তাঁর সঙ্গে সেই সময়ে মোদীর বৈঠক এক নতুন সম্পর্কের আশা তৈরি করে। কিন্তু এবছর কূটনৈতিক চালেই সার্ক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের বাদ দিয়ে বিমস্টেকের দেশগুলিকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।

রাজনৈতিক মহলের মত, পুলওয়ামা কান্ডের পর দিল্লির সঙ্গে পাকিস্তানের দূরত্ব বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, কিরগিজ প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করে 'সাংহাই কর্পোরেশন অরগানাইজেশনে' ভারতকে মধ্য এশিয়ায় শক্তিশালী দেশ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। উল্লেখ্য, এই সংগঠনটি কিরগিজ নেতৃত্ব দ্বারা চালিত হলেও এখানে আছে চীন, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান এবং পাকিস্তানের মতো দেশ।

আরও পড়ুন: মোদীর নয়া মন্ত্রিসভায় বাদ পড়লেন সুষমা স্বরাজ, মানেকা গান্ধী-সহ ৩৭ জন

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে সাংহাইয়ের এই সমিতিটির সদস্যপদ গ্রহণ করে ভারত। রাজনৈতিক মহলের মতে, কিছু কৌশলগত লক্ষ্যপূরণ, যেমন সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে লড়াই এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকার এই সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করে। মনে করা হচ্ছে, জুন মাসের ১৩-১৪ তারিখ নাগাদ সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ বৈঠকে অংশ নিতে কিরগিজস্তানের বিশখেকে যেতে পারেন নরেন্দ্র মোদী।

বিমস্টেকের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ জগন্নাথ, যিনি জানুয়ারী মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত প্রবাসী ভারতীয় দিবসে সবচেয়ে সুপরিচিত ভারতীয় বংশোদ্ভুত হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের এই প্রতিবেশী দেশ, যেখানে ভারতীয়দের সংখ্যাই বেশি, সেখানে কূটনৈতিক নীতিতেই কিছু মূলধন বিনিয়োগ করা হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী যে নরেন্দ্র মোদীর প্রাথমিক পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে থাকবেন তা বলাই বাহুল্য।

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন মোদী-শাহ-রাজনাথ, দেখে নিন কেন্দ্রের নয়া মন্ত্রীতালিকা

রাজনৈতিক মহল অবশ্য মনে করছে বিমস্টেকের রাষ্ট্রপ্রধানদের ডেকে ভারতকে বিশ্বদরবারে সামনের সারিতে আনার বার্তা প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদী। এই বিমস্টেক সংগঠনটিতে ভারত ছাড়াও আছে বাংলাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর মাসে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হয় বিমস্টেকের চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলন।

প্রসঙ্গত, উরি আক্রমণের পর ভারত বহুবার সার্ক গোষ্ঠীর কাছে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আবেদন জানায়, কিন্তু তাদের তরফ থেকে কোনওরকম পদক্ষেপ না নেওয়ায় সার্ক গোষ্ঠীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে বিমস্টেক গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রাখে ভারত। এমনকি গোয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনেও আমন্ত্রিত ছিলেন বিমস্টেকের রাষ্ট্রপ্রধানরা। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বয়কটের ইস্যুতে বিমস্টেকের কিছু দেশ দিল্লির আহ্বানকে সমর্থন করেছিল। বিমস্টেক গোষ্ঠীর সব দেশই সার্ক গোষ্ঠীরও অন্তর্ভুক্ত।

Read the full story in English

India narendra modi SAARC
Advertisment