Advertisment

পুরবোর্ড গঠন ঘিরে নাস্তানাবুদ অবস্থা, কাদের মদতে? তৃণমূলেই ঘুরপাক নানা প্রশ্নের

১০২ পুরসভায় জয় পেয়েও তৃণমূল স্তরে কাঁটা থেকেই গেল ঘাসফুলে।

author-image
Joyprakash Das
New Update
No violence to be Mamata Banerjees message at party meet

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১০২ পুরসভায় জয় পেয়েও তৃণমূল স্তরে কাঁটা থেকেই গেল ঘাসফুলে। রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রীর পাহারাতেও শেষ রক্ষা হল না কালনায়। বিজেপির সমর্থনে পুরবোর্ড গঠন করার ঘটনাও ঘটল। পুরবোর্ড গঠনের আগে দুই কাউন্সিলরকে খুন হতে হল। দলীয় অনুশাসন সত্বেও কেন দিকে দিকে বিক্ষোভ করলেন কাউন্সিলররা? এই প্রশ্নই উঠেছে তৃণমূলের ভিতরে-বাইরে। তাহলে এই বিদ্রোহীদের একজোট হওয়ার পিছনে কী কারও মদতে রয়েছে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরমহলে।

Advertisment

উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুন হওয়ার পর পুরবোর্ড গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পুরুলিয়ার ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের ঘটনায়ও বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ায় বাধা দূর করার জন্য ওই হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এখানে নাম জড়িয়েছে খোদ ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের। এদিকে পুরসভা নির্বাচনে ব্যাপক ছাপ্পা-রিগিংয়ের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। একতরফা ক্ষমতা পেয়েও এবার বোর্ড গঠন নিয়েও একাধিক অযাচিত ঘটনা ঘটে চলেছে।

এদিন বোর্ড গঠন নিয়ে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের একাধিক পুরসভায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়া ও পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভার ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তিকে নাড়া দিয়েছে। খড়াতে দলের মনোনীত প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়ে বিজেপির সমর্থন নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর চেয়ারম্যান হয়েছেন। কালনায় তো খোদ রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ হাজির ছিলেন। তা সত্বেও দলের মনোনীত প্রার্থী চেয়ারম্যান হতে পারেননি। ১২ জন কাউন্সিলর রীতিমতো বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। মুখরক্ষা করতে দুজন কাউন্সিলরকে সাসপেন্ড করেছে দল। অন্যদিকে বোর্ড গঠনের প্রেক্ষিতে বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলর ও শহর সভাপতি অরূপ দাসও পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। পর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এমনকী টাকা পয়সার লেনদেন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দীর্ঘ দিনের এই  আদি তৃণমূল নেতা।

কালনার মতো ১৮আসনের পুরসভায় বেশিরভাগ কাউন্সিলর দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, কারও মদত না থাকলে এই প্রকাশ্য বিরোধিতা করা কী সম্ভব? গতকাল এই কাউন্সিলররা বর্ধমানে দলীয় ঘোষণার বৈঠকেও যাননি। রাতে তাঁরা একসঙ্গে থেকেছেন বলেও খবর। তাহলে এই সংগঠিত বিরোধিতা চলল, আর দলের কাছে কোনও খবর ছিল না, তা স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। যাঁরা এই বিক্ষোভের আড়ালে রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে দলের একাংশ। প্রবল বিজেপি বিরোধিতার মধ্যে খড়া পুরসভায় বিজেপির সমর্থনে তৃণমূলের একাংশ বোর্ড গঠন করেছে। কালনা ও খড়ার ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ পুড়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই অভিজ্ঞ মহলের।

তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। সদ্য পুরসভা নির্বাচনেও ঘাসফুল শিবির ১০৮টির মধ্যে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়েছে ১০২টি পুরসভায়। প্রার্থী ঘোষণার সময় রাজ্যের দিকে দিকে রাস্তায় নেমে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়েছে দলের একাংশ। চেয়ারম্যান নির্বাচনেও থেকে গেল সেই অস্বস্তি। শতাধিক পুরসভায় ক্ষমতা পেয়েও পুরবোর্ড গড়তে গিয়ে হোচট খেতে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে। শতাংশের হিসাবে এই ঘটনাগুলিকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলেও ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। 

tmc Mamata Banerjee abhishek banerjee Municipality
Advertisment