Advertisment

বিরাট ধাক্কা রাহুলের, আর সাংসদ নন কংগ্রেস নেতা, সদস্যপদ খারিজ করে দিলেন লোকসভার স্পিকার

আশঙ্কাই সত্যি হল শেষপর্যন্ত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rahul Gandhi disqualified from Lok Sabha day after conviction

রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ খারিজ। গ্রাফিক্স- প্রত্যুষ রায়

আশঙ্কা ছিলই। শেষপর্যন্ত খারিজই হয়ে গেল রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ। শুক্রবার লোকসভার সচিবালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল, কেরলের ওয়ানাডের সাংসদ রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল করা হচ্ছে। এই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছে রাহুল গান্ধি, রাষ্ট্রপতির সচিবালয়, তিরুবনন্তপুরমের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে।

Advertisment

প্রসঙ্গত, সুরাটের এক আদালত বৃহস্পতিবার তাঁকে ফৌজদারি মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করার পরে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর, এটার নেপথ্যে ১০ জুলাই, ২০১৩ সালে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের এক যুগান্তকারী রায়ের জেরে। তার আগে আইন ছিল, দোষী সাব্যস্ত সাংসদ, বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্যদের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আসন ধরে রাখার অনুমতি পাবেন। ততক্ষণ পর্যন্ত পাবেন, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্টে তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন।

সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন মনমোহন সিংয়ের সরকার একটি অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল। কিন্তু, সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে ফেলে বিক্ষোভ দেখান রাহুল। কংগ্রেসে তাঁর সমর্থকরাও এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিল। যার জেরে সরকার অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্সটি ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

Rahul Gandhi defamation high court, Rahul Gandhi protest, rahul gandhi suspended, rahul gandhi MP status, congress protest rahul gandhi, modi remarks case, Rahul Gandhi Surat court
লোকসভার সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তি। সংগৃহীত ছবি

লিলি থমাস বনাম ভারত সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, ‘কোনও সাংসদ, বিধায়ক বা বিধান পরিষদ সদস্য, যিনি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং ন্যূনতম ২ বছরের সাজা পেয়েছেন, তিনি অবিলম্বে সংসদের সদস্যপদ হারাবেন।’ শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ধারা ৮(৪)-কে ‘অসাংবিধানিক’ তকমা দিয়ে বাতিল করেছিল। আগের আইন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দোষমুক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে উচ্চ আদালতে আবেদনের জন্য তিন মাসের ছাড় দিয়েছিল।

আরও পড়ুন মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরের দিন সংসদে রাহুল গান্ধী, দিল্লির রাজপথে আন্দোলনের আঁচ

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের দুই মাস পরে, ইউপিএ সরকার নির্দেশটি বাতিল করার জন্য একটি অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স পাস করেছিল। কারণ, পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে কংগ্রেসের মিত্র তথা আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের সাংসদপদ খারিজ হতে পারত। পাশাপাশি, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ রশিদ মাসুদ সেই সময় একটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। আর, সাংসদ পদ খারিজের মুখে পড়েছিলেন। তাই, ইউপিএ সরকার সেই সময় অর্ডিন্যান্স বা অধ্যাদেশটি পাশ করেছিল বলে মনে করা হয়েছিল।

বিজেপি এবং বামপন্থী-সহ তৎকালীন বিরোধীরা এই অধ্যাদেশ বা অর্ডিন্যান্স নিয়ে মনমোহন সিং সরকার এবং কংগ্রেসের কঠোর সমালোচনা করেছিল। আর, দোষী সাব্যস্ত আইন প্রণেতাদের রক্ষা করার চেষ্টার অভিযোগ এনেছিল। এই অর্ডিন্যান্স বা অধ্যাদেশটি পাশ হওয়ার কয়েকদিন পরে, ২৭ সেপ্টেম্বর রাহুল দিল্লিতে দলের এক সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন।

আজ এত বছর পরে সেই যুগান্তকারী রায়ের কারণেই সাংসদ পদ হারালেন রাহুল গান্ধি। এবার তিনি এবং তাঁর কংগ্রেস কী করে সেটাই দেখার।

CONGRESS rahul gandhi Parliament
Advertisment