কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতি সনিয়া গান্ধী আজ সকালে কর্ণাটকে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় পা মেলান। দীর্ঘদিন পর দলের কোন প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নিলেন তিনি। শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি গত কয়েকটি নির্বাচনের প্রচারেও অংশ নিতে পারেননি।
ভারত জোড়ো যাত্রা শুরুর এক মাস পর সনিয়া গান্ধী আজ এই যাত্রায় যোগ দিলেন। নবমী ও দশেরার কারণে মঙ্গলবার এবং বুধবার কংগ্রেসের ভারত জোড়া যাত্রা স্থগিত ছিল। রাহুল গান্ধী এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা ৭ই সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’শুরু করেছিলেন। কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-এর ২৯তম দিনে আজ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়েছেন সনিয়া গান্ধী। কর্ণাটকের মান্ড্য জেলার পাণ্ডবপুরা থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রায় যোগ দিয়েছেন তিনি। তবে শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি মাত্র এক কিলোমিটার যাত্রায় অংশ নেন।
সনিয়া গান্ধী এই যাত্রায় যোগ দেওয়ায় কর্মী-নেতাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে। সূত্রের খবর বিপুল সংখ্যক মহিলারাও এই পদযাত্রায় ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন। কর্ণাটকের সঙ্গে সনিয়া গান্ধীর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। গান্ধী পরিবারে যখনই রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বারবারেই উঠে এসেছে কর্ণাটকের নাম। কর্ণাটকের মান্ড্য জেলার পাণ্ডবপুরা থেকে এই পদযাত্রায় হাঁটতে গিয়ে হঠাৎই পায়ের জুতো আলগা হয়ে যায় সনিয়ার। হাঁটতে বেশ সমস্যায় হয় তার। তা দেখে এগিয়ে আসেন রাহুল গান্ধী। নিজের হাতে সনিয়ার জুতোর ফিতে শক্ত করে বেঁধে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
আরও পড়ুন: < ক্যাম্পাসেই কুপিয়ে খুন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পড়ুয়াকে! ছাত্র খুনে উত্তাল মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় >
কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ডি কে শিবকুমার সনিয়া গান্ধীর অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলেছেন যে, “এটি দেশের জন্য গর্বের বিষয়।” রাহুল গান্ধী যখন কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ভারত জোড়া যাত্রা শুরু করেছিলেন তখন সনিয়া দেশে ছিলেন না। ভারত জোড়ো যাত্রার শুরুতেই মেডিক্যাল চেকআপের জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন তিনি”। পাশাপাশি তিনি বলেন, আজ বিকেলে বল্লারিতে এক জনসভায় অংশ নেবেন সনিয়া-রাহুল। এর আগে ভারত জোড় যাত্রায় দলীয় সমর্থকের শিশুকন্যার জুতোর ফিতে আলগা হয়ে গেলে সেখানেও রাহুল গান্ধীকে শক্ত করে জুতোর ফিতে বেঁধে দিতে দেখা যায়। ভারত জোড়ো যাত্রার সময় এবং দলের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার আগে সনিয়া গান্ধী কর্ণাটক সফরে রয়েছেন। দশেরা উপলক্ষে বেগুর গ্রামের বিখ্যাত ভীমন্নাকল্লি মন্দিরে পুজোও দেন তিনি।
রাহুল গান্ধী এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতার ও কর্মীরা ৭ই সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করেছিলেন। আগামী বছরের শুরুতে কাশ্মীরে এই যাত্রা শেষ হবে। এই যাত্রায় মোট ৩৫৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা হবে। দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতেই এই যাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
সনিয়ার এই অংশগ্রহণ নিয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল বলেন, “প্রতিদিনই এই যাত্রা জোরদার হচ্ছে এবং দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই যাত্রায় যোগ দিচ্ছেন। সনিয়া গান্ধী এই যাত্রায় যোগ দেওয়ায় কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গিয়েছে”।