কংগ্রেস নেতা তথা কেরালার ওয়ানাড় জেলার সাংসদ রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা করেছেন। ওয়ানাড়ে কালপেট্টা বাস স্ট্যান্ডে এক জনসমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল বলেন, গডসের মতোই এতটা "ক্রোধ এবং বিদ্বেষে পরিপূর্ণ" মোদী, যে তিনি ভারতের শক্তি বুঝতে পারেন নি।
"গডসে গান্ধীকে গুলি করে কারণ তার নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল না। সে কাউকে ভালবাসত না, কারোর পরোয়া করত না, কারোর ওপর বিশ্বাস রাখতে পারত না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একই দশা। উনি ভালবাসেন একমাত্র নিজেকে। একমাত্র নিজেকে বিশ্বাস করেন। দেশের কোটি কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর শোনায় তাঁর কোনও আগ্রহ নেই," মহাত্মা গান্ধীর ৭২ তম মৃত্যুদিবসে বলেন রাহুল।
আরও পড়ুন: ‘এই নাও আজাদি’, গুলি চালাতে চালাতে হুঙ্কার জামিয়ার বন্দুকবাজের
তাঁর ভাষণে রাহুল আরও বলেন, গান্ধীজি চেয়েছিলেন, সকলেই নিজের মতো করে সত্যকে খুঁজে নিন। "আমাদের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি যদি দেখেন, এটি আমাদের ঐতিহ্য। দেশের যে কোনও জায়গা দেখুন, এমন মনীষীদের পাবেন যাঁরা অন্যদের উৎসাহ দিতেন নিজেদের মতো করে সত্য আবিষ্কার করতে। কিন্তু আজ একজন অজ্ঞ ব্যক্তি সেই মহৎ আদর্শকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন," বলেন রাহুল। "এত ক্রোধ এবং বিদ্বেষে পরিপূর্ণ তিনি, যে বোঝেন না ভারতের শক্তির পরিমাণ কী হতে পারে। গডসে যখন গান্ধীকে গুলি করে তখন তাঁর চোখের দিকে তাকায় নি সে, কারণ একজন মিথ্যেবাদী, কাপুরুষ, কখনও সত্যের মুখোমুখি হতে পারে না।"
সম্প্রতি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে রাহুলের বক্তব্য, মোদী এবং বিজেপি দেশের বিভাজন করে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। "আমি ভারতীয় কিনা, তা ঠিক করে দেওয়ার মোদী কে? কে ভারতীয়, কে নয়, তা নিশ্চিত করার লাইসেন্স ওঁকে কে দিয়েছে?" প্রশ্ন রাহুলের। "আমাদের কর্তব্য হলো ওদের মোকাবিলা করা, শান্তিপূর্ণভাবে। যেভাবে আমরা গডসের আদর্শের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম, সেভাবেই মোদীর আদর্শের বিরুদ্ধেও লড়ব। এবং আমি আপনাদের বলছি, আমরা জিতব।
কংগ্রেসের কেরালা শাখা সারা রাজ্যে তাদের সাংসদ, বিধায়ক, ও স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে গত কয়েকদিন ধরে প্রতিবাদেড় আয়োজন করে চলেছে, জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। ওয়ানাড় বাদে রাজ্যের বাকি ১৩টি জেলায় আজ 'ভারতের হিউম্যান ম্যাপ' তৈরি করার উদ্যোগ নেন দলীয় নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: অনুরাগ-প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা নির্বাচন কমিশনের
চলতি মাসের গোড়ার দিকে এক কড়া বিবৃতিতে কংগ্রেস দাবি জানায় যে "নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিল করা হোক এবং জাতীয় জনগণনা (এনপিআর) প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে বন্ধ করা হোক"। দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিকে বলেন যে "সিএএ একটি পক্ষপাতমূলক এবং বিভাজনকারী আইন", যার "অশুভ উদ্দেশ্য" হলো ভারতীয়দের ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়া।
গত সোমবার রাহুল এবং কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে উত্তর প্রদেশে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখার দাবি তোলেন।