জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ফের মোদী সরকারকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে পেট্রোপণ্যে আন্তঃশুল্ক না কমানো নিয়ে অবিজেপি রাজ্যগুলির তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন, লখনউয়ে ১০৫ টাকা আর কলকাতায় পেট্রল ১১৫ টাকা লিটার কেন! রাজস্বের কথা না ভেবে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দেন, সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিতে। এবার রান্নার গ্যাস নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করলেন মমতা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রান্নার গ্যাসের দাম এখনই ৩০০ টাকা কমানো উচিত। এই সময়ে যা বাড়িয়েছে তা এখনই কমানো উচিত।" মমতার দাবি, "গতকালের বৈঠক কোভিড নিয়ে ছিল না আসলে। এগুলো বলবেন বলেই ডাকা হয়েছিল।" এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "তুমি দাম বাড়াবে আর রাজ্যের থেকে কেটে নিয়ে যাবে। রাজ্য পাবে কোথায়?"
উল্লেখ্য, রান্নার গ্যাসের দাম এখন সিলিন্ডার প্রতি হাজার টাকা ছুঁইছুঁই। গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টেও ভর্তুকির টাকা ঢুকছে না বলে বিস্তর অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী পেট্রোপণ্যের দাম নিয়ে যা বলেছেন তার সবটাই নিজেদের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলার জন্য। রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আগেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়েছেন মমতা। একুশের নির্বাচনের আগে শিলিগুড়িতে সিলিন্ডারের রেপ্লিকা নিয়ে বিরাট মিছিলে হেঁটেছিলেন।
আরও পড়ুন পাম ওয়েল রফতানি বন্ধ করল ইন্দোনেশিয়া, এবার ভোজ্য তেলের দামও আকাশছোঁয়ার আশঙ্কা
গতকাল বাংলা-সহ বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলিকে পেট্রোপণ্যের দাম কমাতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এইসব রাজ্য সরকার মানুষের উপর ‘অবিচার’ করছে বলেও দাবি করেছেন নমো। যার বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া ৯৭ হাজার কোটি টাকা। উনি আমাকে ৫০ হাজার কোটি টাকা দিন। পরের দিন পেট্রোপণ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড় দিয়ে দেব। আপনার রাজ্য ৫ হাজার দিয়েছে, আমি ১০ হাজার কোটি দেব।’ বাংলার বিরুদ্ধে মোদী সরকারের বৈমাতৃসূলভ আচরণেরও অভিযোগও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নশিপ, নবান্নে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
মোদী সরকারের পেট্রোপণ্যে কর চাপানোকে ‘গণতন্ত্রে তোলাবাজি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। নভেম্বরে পেট্রোল, ডিজেলের উপর থেকে ভ্যাট ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র, এমনটাই দাবি প্রধানমন্ত্রীর। মমতার প্রশ্ন, ‘কী এমন দাম কমিয়েছেন নভেম্বরে? সবটাই তো লোক দেখানো, কত সেস বসিয়েছেন? কৃষি সেস, রোড সেস, শিল্প সেস, সাজুগুজু সেস? সেই টাকা তো রাজ্য সরকার পায় না। আপনি সব টাকা তুলে নিয়ে চলে যাবেন, আমাদের টাকাও দেবেন না, আর ভোট এলেই আমাদের নামে দোষ দেবেন।’
তৃণমূলের তরফেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, কেন্দ্র বাংলার বকেয়া সব পাওয়া মিটিয়ে দিলেই আগামী পাঁচ বছর প্রেট্রোপণ্যের উপর থেকে সব কর প্রত্যাহার করে নেবে রাজ্য সরকার।