প্রথমে বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল না হওয়া, তারপর রাজ্য বিজেপির নতুন কমিটি ঘোষণা। এই দুই ঘটনার পর থেকে বিজেপির ঘরে-বাইরে ঘটনার ঘনঘটা ঘটে চলেছে। এবার নতুন সংযোজন বিচ্ছিন্নভাবে গ্রুপে গ্রুপে বৈঠক। ঠাকুরনগরে 'ঠাকুরমশাই'-য়ের বৈঠক বা কোনও রাজ্য নেতার বাড়িতে বৈঠক জানাজানি হলেও এমন একাধিক বৈঠক হচ্ছে। রাজ্য বিজেপির দীর্ঘ দিনের পরিচিত মুখরা সৈই বৈঠকে থাকছেন। এমন আরও একাধিক বৈঠক আগামিদিনে হবে বলেই সূত্রের খবর।
বিজেপির রাজ্য কমিটিতে একাধিক দীর্ঘ দিনের নেতৃত্ব বাদ পড়েছেন। এ নিয়ে কারও যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ নেই, তা-ও নয়। কিন্তু এই কমিটির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য বৈঠক, তা মানছেন না বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা। বরং তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন দু'জন শীর্ষ কর্তার বিরুদ্ধে। কমিটির কোনও পরিবর্তন দাবিও করছেন না দলের বাদ পড়া এই নেতৃত্বের একাংশ। জানা গিয়েছে, আরও বেশ কিছু বিষয় উঠে আসছে এই বৈঠকগুলিতে।
বিজেপির একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনে দলের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। দল ধাক্কা খেয়েছে। ৬ মাস ঝামেলা হবে, ৬ মাস পর সামলে নেওয়া যেত। পরিস্থিতি যা চলতি পুরনিগমের নির্বাচনে বামেরা আবার দ্বিতীয় না হয়ে যায়। ওই অংশ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রশ্নও তুলেছে। তাঁদের বক্তব্য, প্রজা নেই রাজা হয়ে কী হবে। বাদ পড়াদের পদে ফেরানো, জেলা সভাপতিদের পরিবর্তন এসব নিয়ে কোনও আলোচনা হচ্ছে না। যাঁরা আছে তাঁরাই নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারছেন না বলেই এই অংশের অভিমত।
সূত্রের খবর, বিজেপির পরিচিত নেতৃত্বের বৈঠকগুলিতে বাংলার উদ্বাস্তু হিন্দুদের বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া নামপ্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক বর্ষীয়াণ নেতার কথায়, 'বাংলার হিন্দুদের দূরাবস্থা সহ্য করব না। আমাদের একটা কমিটমেন্ট আছে। আমরা 'ওয়েট এন্ড ওয়াচ' করছি। বাংলার উদ্বাস্তু হিন্দুদের কী হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আরও আলোচনা হবে। একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। আরও বৈঠক হবে। বাঙালি হিন্দুদের বাঁচানোর জন্য ভাবতে হবে। তাঁদের ফেলে পালাতে পারি না।' দলের এই নেতৃত্ব মনে করছে, এক বছরের আগে নিশ্চয় সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সমস্ত স্তরের শীর্ষ নেতৃত্বকে বিষয়গুলি জানানো হবে। তারপর তো বিকল্প সিদ্ধান্ত রয়েছেই।