বামেদের সঙ্গে জোট চূড়ান্ত। কিন্তু কংগ্রেসর সঙ্গে রফা সূত্র বেরোয়নি। জানা গিয়েছে অধীর চৌধিরীদের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট পীরজাদা। আব্বাস সিদ্দিকি হাত ধরবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তারই রেশ গড়াল ব্রিগেডের মঞ্চেও। প্রকাশ্যে এল কংগ্রেস-আব্বাসের মধ্যে চিড় ধরা সম্পর্কের ছবি। ভাষণের মাঝে মঞ্চে আব্বাসকে নিয়ে উন্মাদনার জেরে একবার কথা থামাতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। এপরই নিজের ভাষণে ইতি টানার কথা বলেন অধীর। সঙ্গে সঙ্গে এসে অবস্থার সামাল দেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। বারে বারে সংযুক্ত মোর্চার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত একবারও অধীর চৌধুরীর মুখে আব্বাস বা তাঁর দলের নাম উচ্চারিত হয়নি। সেই একবারই যেন তাল কাটল ব্রিগেড সমাবেশের।
ঠিক কী হয়েছিল?
বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রদের বক্তব্য আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। পরে ভাষণ দিতে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। নিজস্ব ঢঙে চাঁচাছোলা ভাষায় তখন তৃণমূল এবং বিজেপি-কে একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছেন বহরমপুরের 'রবিনহুড'। সেই সময়ই সমাবেশের মঞ্চে হাজির হন অব্বাস সিদ্দিকি। তাঁকে দেখে মানুষের উন্মাদনা ফেটে পড়ে। 'ভাইজান-ভাইজান' স্লোগানে নিজের বক্তব্য থামিয়ে দেন অধীর।
এরপরই আব্বাসের সঙ্গে মঞ্চেই কুশল বিনিময় করেন মহঃ সেলিম, সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। তবে, সবার সঙ্গে কথা বললেও অবশ্য সেই সময় আব্বাস-অধীর সৌজন্য বিনিময় প্রাকাশ্যে দেখা যায়নি। জানা গিয়েছে, ভাইজানকে এই সময় দু-একটা কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন সিপিএম নেতা মহঃ সেলিম। যা শুনে বক্তৃতা শেষ না করেই মঞ্চ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী।
আরও পড়ুন- বাম-কংগ্রেসের ব্রিগেডে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ ‘ভাইজান’ আব্বাস
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। অধীরকে বক্তব্য শেষ করার অনুরোধ করেন বর্ষীয়ান এই বাম নেতা। তাঁর অনুরোধ মেনে নেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তবে, একবারের জন্যও এদিন ব্রিগেডের মঞ্চে অধীর চৌধুরীর মুখে আব্বাস বা তাঁর দল সেকুলার ইন্ডিয়ান ফ্রন্টের নাম শোনা যায়নি।
কংগ্রেসের সঙ্গে আএসএফ -এর বিবাদ যে প্রকট তাঁর আভাস মিলেছে এদিন আব্বাস উন্নিনের কথায়। বাম প্রার্থীদের জেতানোর ডাক দেন তিনি। এমনকী রক্ত দিয়ে বাম শরিকদেরও সহযোগিতার প্রসিশ্রুতি দেন ভাইজান। একই সঙ্গে কংগ্রেসকে জোটের বার্তা দিয়ে বলেন, 'যাঁরা ভাবছেন, কেন কংগ্রেসের নাম নিচ্ছি না, তাঁদের বলছি, ভিক্ষা চাই না। তোষণ নয়, আমরা ভাগীদার হতে এসেছি। অধিকার বুধে নিতে হবে।'
এরপর অবশ্য মঞ্চে সূর্যকান্তের একপাশে অধীর চৌধুরী ও অন্যপাশে আব্বাস সিদ্দিকিকে বসে থাকতে দেখা গেলেও ততক্ষণে তাল কেটে গিয়েছে। বেড়িয়ে পড়েছে কংগ্রে-আব্বাস ঢোটের ফাটল। পরে সমাবেশ শেষের আগেই ব্রিগেড ছাড়েন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন