'দেশের ঐক্যের জন্য সমজাতীয় সংস্কৃতি, ধর্ম বা ভাষার প্রয়োজন নেই', এমনই মনে করেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। আহমেদাবাদে গুজরাত ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের কাছে নলেজ কনসোর্টিয়ামে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সঙ্ঘপ্রধান। সেই অনুষ্ঠানে রজত কুমার করের ওড়িয়া ভাষার বই "অনন্যা জগন্নাথ অনুভূতিমা"-এর গুজরাতি সংস্করণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে দেশ, জাতি সম্পর্কে নিজের ধারণা বর্ণনা করেছেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত।
আহমেদাবাদের ওই অনুষ্ঠান যোগ দিয়ে ভাগবত বলেন, ''ভাষা, সংস্কৃতি বা ধর্মে একতা বা সমতা কোনও দিনই ভারত তৈরির ভিত্তি ছিল না। ভারতে ৩ হাজার ৮০০-র বেশি উপভাষা রয়েছে। প্রতিটি ভাষা এখানে বিভিন্নভাবে বলা হলেও আবেগ একই থাকে। ভগবান জগন্নাথের সমতুল্য পৃথিবীতে যেমন আর কেউ নেই, তেমনই ভারতও অনন্য। বিশ্বের অন্য দেশগুলি বলে আপনাদের যদি একটি দেশ হিসেবে একত্রিত হতে হয়, তবে আপনাকে সমজাতীয় হতে হবে।''
ভাগবত বলেন, ''ভারত সম্পর্কে প্রাচীন বইগুলি বলে যে এক হতে হলে আপনাকে সমজাতীয় হতে হবে না, কারণ ভারতে একজনকে অনেকের মধ্যে বৈচিত্র্যময় করা হয়েছে। আমরা সাধারণত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের কথা বলি, কিন্তু ভারতে ঐক্যের বৈচিত্র্য রয়েছে।''
আরও পড়ুন- ‘আনসার বিজেপির’, দিল্লির দাঙ্গায় মূল অভিযুক্তের সঙ্গে পদ্ম নেতাদের ছবি পোস্ট করে সরব তৃণমূল
তাঁর কথায়, ''ভারত একটি জাতি, একথা বললে দেখতে হবে কীভাবে এই জাতি তৈরি হয়েছিল। মানুষই জাতি তৈরি করেছিল। জাতিগুলি নিরাপত্তার কারণেই তৈরি হয়েছিল। সবাই ভেবেছিল আমরা একসঙ্গে উদ্যোগী হই তবে আমরা দ্রুত উন্নয়ন করতে পারব। অনেক জায়গায় ভাষা, ধর্ম, সম্প্রদায়, আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গি জাতি তৈরির ভিত্তি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। কোন একটি দলে একক দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে না। কোনও কিছুর উপর ভিত্তি করে যদি আপনি দল তৈরি না করেন তবে লোকজন এটি গ্রহণ করবে না। একটি প্রসিকিউটিং বডি হিসাবে জাতি-দেশের ধারণাটি চালু করা হয়েছিল। যাতে লোকজন দলগুলিতে যোগ দেন।''
এরই পাশাপাশি মোহন ভাগবত আরও বলেন, ''যখন আমরা এই মাটিকে মা বলে মনে করি, তখন এটি হল একটি আবেগ। অনেকে বলেন গরুকে মা মনে করলে ষাঁড়কে বাবা হতে হবে। কিন্তু আমরা এখানে আবেগের কথা বলছি। আশেপাশের সব কিছুই আমার এবং আমাদের লালন-পালন করেছে এই বিশ্বাস ও তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আমরা নদীকে মা, গরুকে মা বলি। পাহাড় ও গাছের কাছে প্রার্থনা করি। আমাদের ভারত এই আবেগ দিয়েই তৈরি।''
Read full story in English