এক সিপিআইএম কর্মী খুনে অভিযুক্ত আরএসএস নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছ গ্রেফতার করল করল পুলিশ। এলাকারই অন্য একটি বাড়ি থেকে আরএসএস-এর ওই নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খুনে অভিযুক্তকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ওই বাড়ির কর্ত্রী তথা পেশায় এক স্কুল শিক্ষিকাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি কেরলের কান্নুরে সিপিআইএম কর্মী পুন্নল হরিদাসকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। ওই খুনে সরাসরি নাম জড়িয়েছিল সঙ্ঘ পরিবারের। খুনে মূল অভিযুক্ত ছিলেন আরএসএস নেতা বছর আটত্রিশের পরাকান্দি নিজিলদাস। ওই খুনের পর থেকেই সে পলাতক ছিল। বিভিন্ন সূত্র মারফত অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। শেষমেশ শুক্রবার কান্নুরে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের গ্রাম পিনারাইয়ে খোঁজ মেলে সিপিআইএম কর্মী খুনে মূল অভিযুক্ত নিজিলদাসের। ওই এলাকারই একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্নুরের সিপিআইএম কর্মী খুনে মূল অভিযুক্ত আরএসএস নেতা পরকান্দি নিজিলদাস মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের গ্রামের বাড়ির কাছে অন্য একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই বাড়িটি প্রসান্থ নামে পরিচিত একজন সিপিআইএম সমর্থকের বলে জানা গিয়েছে। যদিও বর্তমানে প্রসান্থ নামে ওই ব্যক্তি বিদেশে থাকেন। তবে তাঁর স্ত্রী পি এম রেশমা বাড়িতেই থাকেন। রেশমা পেশায় একজন স্কুল শিক্ষিকা। তিনিই নিজিলদাসকে তাঁর বাড়িতে আশ্রয় দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারের পর দু'জনকেই ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, পুলিশ নিজিলদাসকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কান্নুরের ওই এলাকায়। অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন প্রসান্ত নামে ওই ব্যক্তির বাড়ির সামনে বোমাবাজি করেছে। ওই বাড়িতেই গত সপ্তাহ থেকে নিজিলদাস লুকিয়েছিল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- খোলাখুলি বিজেপির প্রশংসায় ‘গর্বিত হিন্দু’ হার্দিক, এবার কি কংগ্রেস ছাড়ছেন পতিদার নেতা?
মোবাইলের সূত্র ধরেই পুলিশ আরএসএস নেতাকে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, একটি মোবাইল ফোন থেকে বাড়ির লোকজনকে ফোন করেছিল নিজিলদাস। সেই ফোন নম্বরটি ট্র্যাক করেই খোঁজ মেলে অভিযুক্তের। কান্নুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছ থেকেই পিনারাই গ্রামের অন্য একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত আরএসএস কর্মী ১৭ এপ্রিল থেকে ওই বাড়িটিতে আশ্রয় নিয়েছিল। রেশমা অমৃতা বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা। তিনি নিজিলদাসের বন্ধু এবং তিনিই তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিলেন বলে দাবি পুলিশের।
এদিকে, সিপিআই (এম)-এর পিনারাই শাখার সম্পাদক কাক্কোথ রাজন বলেন, ''মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশেপাশে একটি বাড়িতে খুনের মামলায় জড়িত ব্যক্তিকে কেউ রাখার সাহস করবে না। সাধারণত আরএসএস এটি করার সাহস পাবে না। আমরা জানি না কেন এই এলাকাটিকেই আস্তানা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন।''
অন্যদিকে, সিপিআই (এম)-এর কান্নুর জেলা সম্পাদক এম ভি জয়রাজন শনিবার বলেন, ''প্রসান্থের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি (প্রসান্থ) অনেক বিষয়েই আরএসএস-এর সঙ্গে একই অবস্থানে থাকতেন। গত বছর কোভিড-নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তাদের নেতৃত্বে চলা আন্দোলনেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন প্রসান্থ। এই ধরনের ব্যক্তিকে সিপিআই (এম) সমর্থক বলা যায় না।''
Read story in English