শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পর সব্যসাচীর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা নতুন করে চর্চায় ফিরেছে। সেই জল্পনায় এবার আরও জল-হাওয়া জোগালেন স্বয়ং সব্যসাচীই। স্বাধীনতা দিবসে নিজে মুখে জানিয়ে দিলেন, তিনিও দিল্লি যাচ্ছেন। যদিও তাঁর দিল্লি সফরের পিছনে ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে বলে যুক্তি দেখিয়েছেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র। বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে সব্যসাচী আবার বলেছেন, ‘‘আমি জ্যোতিষী নই’’। এদিন দিল্লি পাড়ি দেওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরেও একই কথা বলেন সব্যসাচী। এতেই শেষ নয়, দিল্লি উড়ে যাওয়ার আগে কাশ্মীর ইস্যুতে সব্যসাচীর গলায় শোনা গিয়েছে জাতীয়তাবাদের সুর। যে মন্তব্যে এই জল্পনা নয়া মাত্রা এনে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- মমতাকে তৈরি করতে সব নষ্ট করে জীবন দিয়েছিলাম, আর উনিই রাজনীতি করলেন: শোভন
উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগদানের পর মুকুল রায়, অর্জুন সিংয়ের গলাতেও জাতীয়তাবাদের সুর শোনা গিয়েছিল। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন ভাটপাড়ার দাপুটে এই নেতা। তবে এই প্রথমবার নয়, এর আগেও সব্যসাচীর গলায় এমন সুর শুনেছে বঙ্গ রাজনীতি। হোলিতে মারোয়াড়ি সমাজের অনুষ্ঠানে সব্যসাচী দত্তের মুখে দেশের অখণ্ডতা রক্ষার কথা শোনা যায়। সেদিন বক্তৃতার শেষে উল্লেখযোগ্যভাবে তিনি স্লোগান দিয়েছিলেন “জয় ভারত। ভারতমাতাকি জয়”।
আরও পড়ুন: ‘মত্ত অবস্থায়’ গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা, গ্রেফতার রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে
ঠিক কী বলেছেন সব্যসাচী দত্ত?
কাশ্মীর ইস্যুতে এদিন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী বলেছেন, ‘‘ভারতবাসী হিসেবে আমরা গর্বিত। নতুন করে আজ দেশ স্বাধীন হল। ১৯৪৭ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত কাশ্মীরে জাতীয় পতাকা দেখিনি। এবার প্রথমবার কাশ্মীরে তেরঙ্গা উড়েছে। ৭৩ বছর পর কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, ভারত অটুট এটাই প্রমাণিত হল। ব্যক্তি স্বার্থ নয় , দেশের স্বার্থ ভেবে দেখা উচিত’’। উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারা ইস্যুতে প্রথম দিন থেকেই মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা জানিয়ে এসেছে তৃণমূল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই বিল তিনি সমর্থন করেন না। সেই প্রেক্ষিতে কাশ্মীর ইস্যুতে যেভাবে সরব হলেন সব্যসাচী, তা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
আরও পড়ুন: ‘উনি যেদিন আসবেন, সেদিনই বিজেপি ছাড়বেন শোভন’
অন্যদিকে, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পর সব্যসাচী দত্তের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা উস্কে দিয়েছে তাঁর আজকের দিল্লি সফরে। স্বাধীনতা দিবসে বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘শোভন গেছে, সব্যসাচী যাব যাব করছে, তৃণমূল দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিকভাবে’’। সেই মন্তব্যের পর আজ সব্যসাচীর দিল্লি সফর রাজনৈতিক দিক থেকে তাত্ৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনীতির কারবারীদের একাংশের। উল্লেখ্যে, মুকুল রায়ের সঙ্গে সব্যসাচীর লুচি-আলুর দম পর্বের পর থেকেই বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা ক্রমশ বেড়েছে।
আরও পড়ুন: শোভনের বিজেপিতে যোগদান দেখে হাসছেন রত্না! কেন?
এদিকে, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে সব্যসাচী বলেন, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন উনি। ওই এলাকা ওঁর নিজের হাতের তালুর মতো চেনা। পুরনো অভিজ্ঞতা ও নতুন উদ্যোম, এই দুইয়ে নিশ্চয়ই কিছু একটা হবে’’।